ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • অলরাউন্ডার: পর্ব ১

    সাকিব আল হাসান (February 15, 2021)
     
    ফিরছে টেস্ট, ফিরছে মানুষও

    এই মুহূর্তে চট্টগ্রামের টেস্ট-এ চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। মনে হয় সপ্তাহ তিনেক সময় লাগবে ফের মাঠে ফিরতে। একে তো সবে ফিরলাম এত দিন বাদে মাঠে, তারপর আবার চোট পেয়ে মাঠের বাইরে থাকতে কী খারাপ লাগছে, বুঝতেই পারছেন। তবে এই টেস্ট থেকে আমার কেবল চোট-প্রাপ্তি হয়নি, একটা ভাল প্রাপ্তিও হয়েছে। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের একটি নতুন ছেলের খেলা দেখে মন ভরে গেছে। সে হল কাইলি মেয়র্স। কী খেলল ছেলেটা! টেস্টের পঞ্চম দিনে এই রকম চাপ সামলে আন্তর্জাতিক একটা ম্যাচে ডবল সেঞ্চুরি করা চাট্টিখানি কথা নয়। অসাধারণ ব্যাটিং, মাথা ঠান্ডা, ওর মাঠের চরিত্রটা বেশ দৃঢ়, সেটা বোঝা গেছে। কিন্তু এ কথা ঠিক যে বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাপারটা আমার বুকে এসে লেগেছে।

    তবে একটা ব্যাপার এই টেস্ট-এর পর আমি ভাল বুঝতে পারছি। টেস্ট ক্রিকেটের আবার একটা যুগ হয়তো ফিরতে চলেছে। আমাদের দেশের খেলা ঘিরে, কিংবা সম্প্রতি ভারত-অস্ট্রেলিয়ার খেলা ঘিরে মানুষের যে উন্মাদনা দেখলাম, সেটা আবার টেস্ট-ক্রিকেটকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চলেছে। তার বোধ হয় কয়েকটা কারণ রয়েছে। বেশ অ্যাটাকিং ক্রিকেট খেলা হচ্ছে এখন টেস্ট ক্রিকেটে, বেশ দ্রুত খেলা হচ্ছে, আর আগে যেমন কিছু নির্দিষ্ট শটের বাইরে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট চালানোর চল ছিল না, এখন সেটা ভেঙে গেছে। পঞ্চাশ ওভারের খেলা বা আইপিএল-এর দৌলতেই হোক, কিছু নিয়ম ভেঙে গেছে। সেটা ভাল না খারাপ, তা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে, দর্শক, মানে টিভিতে যারা দেখছে আনন্দ পাচ্ছে আর নতুন যারা খেলতে আসছে, তারা আগে টেস্ট ক্রিকেট বললেই যে একটা সাংঘাতিক গম্ভীর ভারী কিছু মনে করত, সেটা মনে করছে না। ফলে, তাদের মানসিক চাপটাও কম থাকছে। টেস্ট ক্রিকেটের জমানা যদি ফিরে আসে, তা হলে মন্দ হয় না। হ্যাঁ, এটা মানতে হবে যে আইপিএল বা সীমিত সংখ্যক ওভারের খেলার মতো দর্শক থাকবে না বা দর্শক আসবে না, কিন্তু যারা আসবে তারা খেলাটাকে ভালবেসে আসবে, খেলার মেজাজের জন্য আসবে। ক্ষণিকের উত্তেজনা বা বিনোদনের জন্য আসবে না। এটা ক্রিকেটের একটা বড় প্রাপ্তি।

    দর্শকদের কথা যখন বললাম, তখন একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেই হবে। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক না থাকলে কিন্তু মনে হয় না আন্তর্জাতিক কোনও ম্যাচ খেলছি। দর্শক যে-দেশের, যে-টিমের হোক না কেন, দর্শকের উপস্থিতি খুব প্রভাব ফেলে। একটা অন্য রকম আবহাওয়া তৈরি করে, একটা অন্য রকম উত্তেজনা অনুভব করা যায়। এই যে চট্টগ্রামের টেস্টটা খেললাম, মনেই হচ্ছিল না আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছি। মনে হচ্ছে ঘরের মাঠে যেমন সাদামাঠা ডোমেস্টিক ক্রিকেট হয়, এ যেন তেমনই। ঠিক যেমন প্রেস কনফারেন্সগুলো মিস করছি। অত সাংবাদিক, ক্যামেরা, আলো, খেলা শেষের পর ভাল-খারাপ প্রশ্ন উড়ে আসত, সে সব এখন অনলাইনে করতে হয়। অনলাইনে করা সবই যায়, কিন্তু মানুষের উপস্থিতির উত্তাপ একটা অন্য রকম প্রভাব ফেলে। নিজেকে খুব চার্জড লাগে। 

    আসলে গত এক বছরে মানুষের সঙ্গে মেলামেশা এতই কমে গেছে যে আমাদের স্বভাব-ব্যবহারও হয়তো বদলে গেছে কমবেশি। সেটা আমি নিজে হয়তো বুঝতে পারছি না, কিন্তু অন্য যে লোকটা আমায় দেখছে, সে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে। গত বছরটা আমি দুটো দেশ মিলিয়ে থেকেছি। আমেরিকা আর বাংলাদেশ। আমেরিকায় হয়তো অনেক বেশি সংক্রমণ হয়েছে, ভয়ানক আকার নিয়েছে। তাই ওখানকার বাসিন্দাদের ভয়ও অনেক বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে দেখলাম, তেমন ভয় নেই মানুষের। প্রথম দিকে তো অনেকে বিশ্বাসও করছিল না। তবে আমরা বিপদটা পার হয়ে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য একটা কথা বলতেই হবে, আমেরিকার লোকেরা সবেতেই একটু বেশি ভয় পায়। একটু ফুড পয়জন হলে ওরা যে রকম ভয় পায়, আমাদের একটু অবাকই লাগে। আমরা আসলে পেটখারাপ, মাথাব্যথা, জ্বর সঙ্গী করেই বড় হয়েছি। ও-সব আমাদের কাছে টুকটাক অসুখ। তাই সহজে হয়তো তৃতীয় বিশ্বের মানুষ তেমন করে ভেঙে পড়েনি। তা বলে আমরা কি ভয় পাইনি? পেয়েছি। এখন অবশ্য মনে হচ্ছে সেই ভয়ের চাদর সরিয়ে, ফের স্বাভাবিক জীবনে একটু একটু করে ফিরব।  

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook