গল্প / কবিতা

নীলোৎপল মজুমদার

অন্ধকার যেমন কালো হয়

‘পাড়ার লোকের জন্য ব্যাকুল মাসির এক অনবদ্য উপহার এই কুলগাছ। পুরো আকাশটাকেই যেন ঢেকে রেখেছে অগুন্তি শাখা-প্রশাখার নিখিল সংসার। বিস্তৃত ডালপালার বুননে এক সবুজ মৌচাক। চারিদিকে নেমে এসেছে শ্যামলীদির মতো খোলা বেণির আলুথালু চুলের জঞ্জাল। আরেকটু হলেই জানু ছোঁবে মাটি।’ নতুন গল্প।

পার্থপ্রতিম মৈত্র

রাষ্ট্রহীনের কবিতাগুচ্ছ

‘এখানে যামিনী বিল, এখানে সহস্রঘর কৈবর্তের বাস/ ঊর্ধ্বে চোখ রাখো, দ্যাখো কাঁটাতারে ঢেকেছে আকাশ/
পর্চা আছে? থাকলে ভাল। তা নাহলে খর্চা আছে জোর/ কী করে প্রমাণ করবি এই দেশ, এই মাটি তোর?’ নতুন কবিতা।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৮

‘মাদ্রাজে গুরুর সামনে বসে গল্প করতে করতে এই সব কথাগুলোই কেবল মনে পড়ত। ভাবতাম এ-মানুষটা যে হাসে, অভিনয় করে, গল্প করে এটাই তো একটা বিস্ময়! আর এ মানুষটা যে ঘুমোতে পারে না, এটাই তো স্বাভাবিক! যদি ঘুমোতে পারত তাহলেই আমি হয়তো বেশি অবাক হতাম।’ কেন গুরু বিনিদ্র।

সুভাষ কর্মকার

মজুত

‘বড়লোক, ছোটলোক সবাই একই জিনিসের জন্যে লাইনে দাঁড়িয়েছে। মদের দেবতার চোখে সবাই সমান। দোকান থেকে বেরোলেই শুরু হয় ছোট-বড়-মাঝারি! যদিও আজকে সবাই মজুতদার। যার পেটে যতটা সয়। আজকে কারখানার মালিককে কড়কে দিতে হবে। শালা, পাঁচশো টাকায় তিনটে পেট কী করে চলে!’ নতুন গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৭

‘বুঝলাম, গুরু ঠিক এভাবে এই নিরিবিলিতে আর থাকতে পারছে না। সে অসহ্য হয়ে উঠেছে এই কদিনেরই মধ্যে। আমার এখানে যত ভালো লাগছে, তার তত খারাপ লাগছে। গল্প লেখা এগোচ্ছে, ওদিকে তার শুটিংও চলছে। তাস খেলতে পাচ্ছে না। আমি তাকে সমস্ত আপদ থেকে দূরে রেখেছি।’ মহাবলীপুরম্‌-এর একাকীত্ব।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৬

‘গুরু আমার কথায় অবাক হয়ে গেল। সে যেন আমার কথায় নিজেকে খুঁজে পেল। আমি বললাম— আপনি কি বেশিদিন কাউকে ভালোবাসতে পারেন? আপনার যে সবাইকেই কিছুদিন পরে একঘেয়ে লাগে।’ মহাবলীপুরম্‌-এ গুরুর সান্নিধ্য।

মৃদুল দাশগুপ্ত

কয়েকটি কবিতা

‘এ হল টুকরো কথা, কাহিনি না, অগাধ বাস্তব/ একার গাইড বুক, ভ্রমণের, তাতেও ছাপার কত/ রয়ে গেছে ভুল/ সযতনে তাও পড়ো, শুনো তো আড়ালে নিয়ে/ একেলার এই কলরব/ ধিকি ধিকি ধিকি ধিকি, ছিটকে বেরোবে তবে/ বিবিধ মৃদুল’ নতুন কবিতা।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৫

‘মহাবলীপুরম্‌’ নাম শোনা ছিল জায়গাটার। এককালে ছিল পহ্লবীদের একটা বিখ্যাত বন্দর। তারপর আছে লাইট-হাউস তারপর পক্ষীতীর্থ। আমরা দেশ-ভ্রমণ করতে আসিনি। একটা নিরিবিলি জায়গা শুধু খুঁজছিলাম, যেখানে দুজন মুখোমুখি বসে গল্প করা যায়। গল্প মানে সিনেমার গল্প।’ শহর ছেড়ে শান্তির খোঁজে।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৪

‘গুরু উঠে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল, আর আমি আমার নিজের ঘরে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম কেন এ-মানুষটা এমন করে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলছে? কিসের অভিমানে? অভিমান না হয়ে যদি রাগ হয় তো কার ওপর রাগ?’ ঘুমহীন রাত।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪৩

‘বিয়ের পর প্রথম ছ-বছর পরিপূর্ণ সুখে কেটেছে। তারপর থেকে যে সেই অশান্তি শুরু হয়েছে তার যেন শেষ নেই। অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে বাঁচাটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। ‘ গুরু আর গীতার জীবনের দুর্যোগ।

সুমন্ত মুখোপাধ্যায়

টুকরে টুকরে

‘বাসের জানলায় দেখা দুজন লেবার/
একশো ফুট শূন্যে উঠে দে দোল দুলছিল/ সব দাগ তুলছিল তবু/ কাচে ছায়া লেপ্টে অধোগামী/ মুছে দিতে বলছ/ কিন্তু আহ্নিকে বার্ষিকে আজ প্রশ্ন করি আমি/ নিজেকে কি মুছে ফেলা যায়’ নতুন কবিতা।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

ভবদীয়: পর্ব ৫

‘বড়দিন ধুমধাম করে কেটে গেল, গির্জা আর আশ্রম ঘুড়ির কাগজের রঙিন শিকলি দিয়ে সাজানো হল, সুধীজনকে আপ্যায়ন করা হল গুড়ের পুলি আর পিঠা দিয়ে, জরি মুড়ে দেওয়া হল ক্রিসমাস ট্রি-কে মানে ঝাউগাছকে, শিশুরা পেল উপহার।’ বড়দিনের উদযাপন।