বাঙালির চাল-চিত্র
সমস্ত বাঙালির মতোই তর্কপ্রিয় আমিও, তবে সে তর্কের অভিমুখ কখনও কখনও একটু বেয়াড়া টাইপের। যেমন ‘চালচুলো’ শব্দের অর্থ নিয়ে অভিধানের সঙ্গে আমার তর্ক রয়েছে। অভিধান বলে, এর অর্থ আশ্রয় ও অন্নসংস্থান – কুঁড়েঘরের চাল এবং রান্নার চুলো বা উনুন অর্থে। ভেতো ও বেয়াড়া আমি ভাবতে থাকি, ‘চাল’-কে মাথার উপর ছাদ হিসেবে ভাবার দরকার কী, আর তা-যদি বা থাকেও, দু-মুঠো চাল ফুটিয়ে পেটে যদি না দিতে পারি, তবে তবে সাতমহলা প্রাসাদই বা কোন কম্মে লাগে, অ্যাঁ? কাজেই ‘চালচুলো’ আমার কাছে বয়ে নিয়ে আসে গরম ভাতের গন্ধ আর অনুষঙ্গ, তার থেকে বড় আশ্রয় আর কীই বা আছে?
চাল ফুটিয়ে ভাত হয়তো সেই সিন্ধু সভ্যতার আমল থেকে এই উপমহাদেশের সব লোকেরাই খাচ্ছে, কিন্তু অন্ন-অনন্যপর, অর্থাৎ ‘ভেতো’-র গৌরব বা স্টিগমা, যাই বলুন, লেগেছে শুধু বাঙালির গায়েই। তার কারণ সম্ভবত বাঙালির কাছে সেই সাতপুরনো ভাতের আর কোনও বিকল্প ছিল না। সাহিত্যেও তাই সেই অতি-নির্ভরতার ছবি চতুর্দিকে। চর্যাপদে দারিদ্র্যের প্রধান দ্যোতক অন্নাভাব – ‘হাড়ীতে ভাত নাহি নিতি আবেসি’, অর্থাৎ হাঁড়িতে ভাত নেই, তাই কপালে নিত্য উপোস। মঙ্গলকাব্যে, বিশেষত চণ্ডীমঙ্গল আর অন্নদামঙ্গলে ভাত নিজেই এক বড় প্রটাগনিস্ট, তাকে ছাড়া দামাল বালক, বুড়ো বণিক থেকে ভোজনবিলাসী ভূত, কারওই চলে না। আর ভারতচন্দ্রের কাল ছাড়িয়ে যেই ঢুকে পড়লাম উনিশ শতকে, ব্যস, ‘সোনার বাংলার’ ধনধান্য নিয়ে রাজ্যের আদিখ্যেতা শুরু হয়ে গেল, তাও আবার এমন সময়ে, যখন ব্রিটিশ শাসকরা মওকা বুঝে ধান চাষের জমিতে লাগিয়ে দিচ্ছে পাটের মতো বাণিজ্যিক শস্য। ‘এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে’ এই ভাবেই প্রিয় চিত্রকল্প হয়ে আমাদের মমতামাখানো মায়ামুকুরে ফুটে ওঠে। রবীন্দ্রনাথের ছোট তরী ‘সোনার’, কারণ ‘সে আমারই সোনার ধানে গিয়েছে ভরি’, সেখানে আর ‘ঠাঁই নাই’। জীবনানন্দের কথা আর কী বলব, ধানের বর্ণনায় তিনি যেন যাকে বলে ‘কিড ইন আ ক্যান্ডি স্টোর’। রূপসী বাংলার কথাই দেখুন, কখন যেন জলসিড়ি নদী টুক করে হয়ে যায় ধানসিড়ি, ভাঙা নদীঘাটে ‘পাট শুধু পচে অবিরল’ (ওই শসা, চালকুমড়ো, বা মানুষের মতোই) , কিন্তু ধান নিয়ে কোনও কথা হবে না, নো স্যার – অতএব উঠোনের ঘাসে খইয়ের ধান ছড়ায় শিশু, কেশবতী কন্যাদের চুলে মাখামাখি হয়ে থাকে ধান, কিশোরীদের হাত ভিজে থাকে চাল-ধোওয়া জলে, এমনকী হৃদয়ের গহনে আকাঙ্ক্ষার গায়েও লেপটে থাকে চাল-ভাঙা ‘ক্ষুদের গন্ধ’।
স্বামী বিবেকানন্দের দাদা মহেন্দ্রনাথ তাঁর কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা বইটিতে জানিয়েছেন যে উনিশ শতকে খাবারদাবার সস্তা ছিল বলে লোকে খেত বেশি, আকৃতিতেও ছিল বড়সড়। তাঁর সময়ে শহরের লোকেরা গড়ে দিনে ‘আড়াই পোয়া’ (অর্থাৎ আন্দাজ প্রায় ৬০০ গ্রাম) আর রাতে আধ সের চালের ভাত খেতেন, আর গ্রামগঞ্জের লোকেরা শহরে এসে অবস্থাপন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়ি থাকলে খেতেন এর মোটামুটি দেড় গুণ। আর ব্যাপক ভাবে, বিশেষত পূর্ববঙ্গে, চালু ছিল জলখাবারে ভাত খাওয়ার চল, সঙ্গে সাধারণত সদ্য রান্না-হওয়া ডাল আর আলুসিদ্ধ। আর রেফ্রিজারেশন যেখানে অকল্পনীয়, সেখানে ভেতো বাঙালি রাতভর ভিজিয়ে রাখা পান্তাভাত সকালে খাবে, তাতে আর আশ্চর্য কী? সেই অনির্বচনীয় বস্তুটির ইতিহাস লিখতে গেলে একখানা আস্ত মহাভারত হয়ে যাবে, তাই সে আলোচনা অন্য আরেক দিনের জন্য মুলতুবি থাক।
খুব সম্ভবত এই অতুলনীয় অন্ন-নির্ভরতার জন্যই আঠারো শতকের ব্রিটিশ ঐতিহাসিক রবার্ট অর্মে থেকে শুরু করে উনিশ শতকের শেষে আর বিশ শতকের গোড়ায় ব্রিটিশ প্রশাসক ও নৃতত্ত্ববিদ হার্বার্ট রিজলে পর্যন্ত বহু সায়েব রাজপুরুষেরাই ভারতীয়দের তথা ভেতো বাঙালিদের ভিতু ও দুর্বল বলে উপহাস করতেন, যার জবাবে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের দশকগুলিতে বাঙালি ভদ্রলোকের মধ্যে বাহুবলের প্রতি এক ধরনের আসক্তি তৈরি হতে শুরু করে। সেই দর্শনে বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাখাদ্য বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল। ১৮৬৮ সালে হিন্দু মেলার দ্বিতীয় অধিবেশনে মনোমোহন বসু বাঙালিকে এই দুর্বলচিত্ত আর ‘ভেতো’ জাতির অপবাদ ঘোচানোর ডাক দেন, আর সেই আহ্বানের প্রতিধ্বনি শোনা যায় ১৮৭৩-এ প্রকাশিত রাজনারায়ণ বসুর সেকাল আর একাল-এও। এ নিয়ে জন রসেলি, মৃণালিনী সিংহ, ইন্দিরা চৌধুরী, বা সম্প্রতি রোহান দেবরায়ের মতো ঐতিহাসিকরা অনেক গবেষণা করেছেন, তার বিশদ আলোচনা এখানে নিষ্প্রয়োজন। কিন্তু, নৃতত্ত্ববিদ শ্রীরূপা প্রসাদ তার সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাগ্রন্থ Cultural Politics of Hygiene in India, 1890-1940: Contagions of Feeling (২০১৫) চমৎকার ভাবে দেখিয়েছেন যে, বিশ শতকের গোড়ায় যখন বাংলার নগরজীবনে এক নতুন অর্থনৈতিক সংকট – যার পরিপ্রেক্ষিতে অবাঙালি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলির প্রতিপত্তির প্রতি বাঙালি উত্তরোত্তর সন্দিগ্ধ হয়ে পড়ছিল – তখন সেই সব গোষ্ঠীদের খাদ্যাভ্যাসের প্রতীক রুটির বিপরীতে সেই সাতপুরনো, বহুনিন্দিত ভাতই আবার ফিরে এল বাঙালি ভদ্রলোকের প্রতিস্পর্ধী আইডেনটিটির এক প্রতীক হয়ে। ১৯২০-র দশকে প্রকাশিত স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত বিভিন্ন উপদেশমূলক পুস্তিকা – যেমন সুরেন্দ্রনাথ গুহের স্বাস্থ্য সমাচার, বা নিবারণচন্দ্র ভট্টাচার্যের বাঙালির খাদ্য ও পুষ্টি – পড়লে বোঝা যায় রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির ভাতের প্রতীকী ভূমিকাও কী ভাবে বদলে যায়, যা কয়েক দশক আগেই জাতীয় শারীরিক দুর্বলতার প্রধান কারণ বলে প্রতিভাত হয়েছিল, তা-ই এখন হয়ে দাঁড়ায় জাতির গৌরবের দিকচিহ্ন, এবং ভিন্ন জাতির জনগোষ্ঠীর ‘অপরায়ণের’ এক মোক্ষম অস্ত্রও বটে।
ধান থেকে তৈরি চাল পৃথিবীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ লোকের প্রধান খাদ্য, আর গোটা ভারতের মোট ধান চাষের জমির এক- চতুর্থাংশেরও বেশি বাংলায়। মহাত্মা গান্ধী অবশ্য তাঁর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বইতে লিখেছেন যে ভাত অপদার্থ, আর গমই হল সাচ্চা মানুষের আসল খাদ্য। ওই জন্যই তো আমরা গান্ধীর সঙ্গে তর্ক করি অন্যান্য প্রদেশের লোকজনের থেকে একটু বেশিই। অপদার্থ খেয়ে কি আমরা অমানুষ হয়েছি, অ্যাঁ? তবে হ্যাঁ, এ কথা স্বীকার কোর্টেই হবে যে বাঙালির চাল-চিত্রে অসাম্য ও বঞ্চনার অনুষঙ্গ কম নয়। ‘ভাত’ নামে মহাশ্বেতা দেবীর একটি নির্মম গল্পে দেখেছি সুন্দরবনের বাঙালির চাল-চিত্রের দুই বিপরীত মেরুর সহাবস্থান – এক দিকে বাদায় ধানজমির মালিকের বাড়িতে হরেক রকম চালের প্রাচুর্য – ‘ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল তরকারির সঙ্গে। রামশাল চালের ভাত মাছের সঙ্গে। বড়বাবু কনকপানি চাল ছাড়া খান না, মেজ আর ছোটর জন্য বারোমাস পদ্মজালি চাল রান্না হয়।’ এর পাশাপাশি ‘বামুন-চাকর-ঝি-দের জন্যে মোটা সাপটা চাল’, কিন্তু বাড়ির মহাযজ্ঞের জন্য কাঠ কাটতে আসা এক হদ্দ গরিব মুনীষের পেটে হা হা করে আগুন জ্বলতে থাকে, তার কপালে একটি দানাও জোটে না। এই উচ্চাবচ ইতিহাসই আমাদের ভাতের ইতিহাস, সমাজেরও ইতিহাস, তাই আমাদের যেমন রাজাভাতখাওয়া আছে, তেমনই আছে ঠনঠনিয়া বা ধাপধাড়া গোবিন্দপুর।
ভেতো বাঙালির হরেক রকম পুরনো ঐতিহ্যবাহী চালের ইতিহাস বহু দিনের, অনেক দিন পর্যন্ত সে সব ‘হেরিটেজ’ চাল ফলাতেন আমাদের বাঁকুড়া বীরভূম বর্ধমান আর সুন্দরবন অঞ্চলের চাষিরা, তাতে রাসায়নিক থাকত না, পুষ্টি ছিল প্রচুর, আর পরিবেশ-বান্ধবও ছিল তাদের ফলন। তাদের হটিয়ে আমাদের হেঁশেলে পাকাপাকি জায়গা নিয়েছে উচ্চফলনশীল বাণিজ্য-বান্ধব চাল, ফলে আমাদের পুরনো, ঐতিহ্যশালী নানান চালের জায়গা হয়েছে বিস্মৃতির অতলে অথবা মুষ্টিমেয় পাঁচতারা হোটেলের বিলাসবহুল রেস্টোর্যান্টে। সেখানে সে সব চাল দিয়ে এখন বানানো হয় এমনকী রিসোত্তো বা পায়েয়া, আর তুলসীমুকুল বলে একটু আঠালো টেক্সচারের চাল তো এখন সুশির প্লেটে জায়গা পাচ্ছে। আর সেই সঙ্গে ধান ভানার ঢেঁকি কী ভাবে অচল হয়ে গেল, কী ভাবে ওই স্বাস্থ্য-বান্ধব জিনিসটির গায়ে পড়ে গেল ‘বুদ্ধির ঢেঁকি’ বা ‘নিষ্কর্মার ঢেঁকি’র মতো কালশিটে, তা আমার বুদ্ধির অগম্য। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক-নির্ভর ধান চাষের – যা আদতে সবুজ বিপ্লবের অবদান – প্রধান বলি অবশ্যই ঢেঁকিছাঁটা লাল চাল। আর যন্ত্রায়িত চাল কলের মেশিনে ছাঁটা, পালিশ করা মসৃণ সাদা চাল দিয়েই আমরা বানিয়ে চলেছি প্লাস্টিকের জুঁই ফুলের মতো ভাত, সেখানে প্রাধান্য দুধের সর, বাঁশকাঠি, মিনিকেটের মতো চালের, তাদের রমরমায় চাপা পড়ে যায় আমাদের কয়েক হাজার রকমের ঐতিহ্যবাহী চাল, যার মধ্যে আছে বাদশাভোগ, চিনে কামিনী, দাদশাল, কনকচূড়, কালাভাত, কালিজিরা, কাশিয়াবিন্নি, বেগুনবিচি, জামাইভোগ, দাদখানি, কালোনুনিয়া, কাটারিভোগ, কর্পূরকান্তি, রাধাতিলক, রূপশাল, রাঁধুনিপাগল, রানিয়াকান্দা, তুলাইপঞ্জি, হোগলা, হ্যামিলটন, চিনিগুড়া, ভূতমুড়ি, আরও কত কী! মিলন দত্তের বাঙালির খাদ্যকোষে আছে এ রকম দুশোরও বেশি বাংলার ঐতিহ্যবাহী ধান্যের নাম। এর কিছু কিছু আজকাল অরগ্যানিক ফারমিং-এর কল্যাণে বাঙালির হেঁশেলে ফিরে আসছে, সেটা অতি আনন্দের কথা, সে আনন্দ অনেক বৃদ্ধি পাবে যদি তার দামটা আরেকটু পকেট-বান্ধব হয়।
এ ছাড়া চাল আর ভাত তো নিছক ক্ষুন্নিবৃত্তির মৌলিক উপচারই নয়, তার অনেক গুণাগুণ। বিজ্ঞানচন্দ্র ঘোষ তাঁর আহার (১৯৪২) বইতে বলে দিয়েছেন, পোড়া চাল ভাজা ও চিনি সমপরিমাণে মিশিয়ে খেলে বহুমূত্র দোষ কমে। কান পাকলে বা কানের গোড়া ফুলে ব্যথা হলে তার ওষুধ হল আতপ চাল পোড়া, এক চিমটি আফিং আর ধুতরো পাতার রসের সঙ্গে মেড়ে লাগানো, তাতে ফোলাও কমে, ব্যথাও। আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে ভাতের মণ্ড (পোরের ভাত) – ক্ষুধাবর্ধক, বলকারক, রক্তবর্ধক, জ্বর কফ পিত্ত ও বায়ু প্রশমক। রাঁধতে হয় ঘুঁটের আঁচে। ভুবনচন্দ্র বসাকের খাদ্যবস্তুর দ্রব্যগুণ (১৮৮৫) নামের একটি বইতে দেখেছি, পুরনো চালের ভাত খেলে যে সব রোগের উপশম হয়, তার মধ্যে আছে ‘পুরাতন জ্বর, অতিসার, ক্রিমি, গ্রহণী, অর্শ, অগ্নিমান্দ্য, বিসূচিকা, পাণ্ডু, কামলা, কাশ, শ্বাস, স্বরভেদ, অরুচি, তৃষ্ণা, মূর্ছা, মদাত্যয়, অপস্মার, বাত, শূল, গুল্ম, উদাবর্ত, আনাহ, হৃদ্রোগ, মূত্রকৃচ্ছ, মূত্রাঘাত, অশ্মরী, প্রমেহ, মেদ, ব্রণ, ভগন্দর, উপদংশ, কুষ্ঠ, অম্লপিত্ত’, ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ঠেসে ভাত খাওয়ার ‘অহিত’ অর্থাৎ কোল্যাটেরাল রিস্ক-এর মধ্যে নেহাতই, ইয়ে, মানে ওই বহুমূত্র, আমবাত, উরুস্তম্ভ, উদরী, বা গলগণ্ডের মতো এলেবেলে রোগ। হোক না প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো বই, প্রাজ্ঞজনদের কথা মিথ্যে হয় না। তাই শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে রবিবারের মাংসদুপুরে পেট ‘পরিপুন্নু’ হয়ে যাওয়ার পরে ঠেসে দিই আরও কয়েক গ্রাস, আর কানে বাজতে থাকে ডরিস ডে’র সেই বিখ্যাত গান, Que sera, sera / Whatever will be, will be.
সেই অতিভোজনের পরেই দু’চোখে জড়িয়ে আসে ভাতঘুম, কিন্তু এক মেদুর খচখচানি কাটে না। মনে হয়, তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকল, শৈশবের মায়ামুকুরে দেখা কত কিছুই খেয়ে উঠতে পারলাম না এখনও, যেমন রবি ঠাকুরের পিড়িং শাক, যেমন সুকুমারের বার্মার ‘ঙাপ্পি’। কিন্তু যোগীন্দ্রনাথের ‘দাদখানি চাল’? পরের সেই সব আশ্চর্য শব্দবন্ধের প্রায় সবগুলোই খেয়েছি, কিন্তু সম্ভবত প্রাক-মুঘল বাংলার শেষ সুলতান দাউদ খানের নামে নামাঙ্কিত সেই চাল নয়। কেন সে হারিয়ে গেল আমাদের জীবন থেকে? আচ্ছা, ওই দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনটার আগের নাম যেন কী ছিল? ভেতো, তর্কপ্রিয় বাঙালির দীর্ঘশ্বাস পড়ে। সে জানে, সব প্রশ্নের উত্তর মেলে না।
ছবি এঁকেছেন অনুষ্টুপ সেন