ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • কুইন অফ হার্টস

    কৌশিক মজুমদার (February 14, 2025)
     

    ফির মেরে সাথ পিকচার করোগে না ইউসুফ? ইয়া আল্লাহ… ম্যায় মরনা নেহি চাহতি!’ রুপোলি পর্দায় সবরকম বাঙ্ময় বেদনাকে দিনের পর দিন মূর্ত করে তোলা দিলীপকুমারের মুখে কোনও কথা জোগাচ্ছিল না। দু’চোখে টলটল করছে জল। হাসপাতালের দুধসাদা বিছানায় শুয়ে ক্ষীণ-কাতর গলায় যে-মেয়েটি তার শেষ আর্তিটুকু জানাচ্ছে, কে বলবে ডাক্তারের বার বার বারণের পরেও দিনের পর দিন ভারী পোশাক পরে দিলীপের সামনেই এই মেয়ে একলা নেচে গেছেন আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে! অজ্ঞান হয়ে গেছেন। আবার উঠে দাঁড়িয়ে সব গ্লানি এক ঢোঁকে গিলে ফেলে স্বর্গীয় এক হাসি ছড়িয়ে গানের লিপ দিয়েছেন অনায়াসে, ‘মত ওহি জো দুনিয়া দেখে, ঘুট ঘুট কর ইয়ুঁ মরনা ক্যায়া…’

    জন্ম থেকেই মৃত্যুকে নাগপাশের মতো জড়িয়ে ছিলেন তিনি। এগারো ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম, ছোট্ট মুমতাজ জানতেই পারেননি তাঁর হৃৎপিণ্ডের বাসরঘরে কালনাগিনী এক গভীর ছিদ্র করে রেখেছে। ঈশ্বর যেন শুরু থেকেই বেঁধে রেখেছিলেন তাঁর যাত্রাপথ। কিন্তু কালে-কালে গোটা ভারতের কুইন অফ হার্টস হবেন যিনি, তাঁকে এভাবে কে কবে বাঁধতে পেরেছে? ঈশ্বরও হার মেনেছেন তাঁর কাছে।

    একেবারে শুরুর দিনগুলো একেবারেই মসৃণ ছিল না। ভাল গাইতে পারতেন। অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো-তে শিশুশিল্পী বিভাগে সুযোগ পেতেন নিয়মিত। বাবা আতাউল্লা খান ছিলেন ভয়ানক অ্যাবিউসিভ। নিজের না পারার জ্বালা মেটাতেন স্ত্রী আর সন্তানদের অকারণ আঘাতে। ব্যতিক্রম শুধু মুমতাজ। ততদিনে আতাউল্লা বুঝে গেছেন বোম্বের স্বপ্ননগরীর চাবিকাঠি আছে একমাত্র এই মেয়ের হাতেই। এঁর দেহে কালসিটে পড়লে কেউ সিনেমায় নেবে না।

    আরও পড়ুন : গুরু গণপতিকে কি শেষজীবনে এড়িয়ে গিয়েছিলেন পিসি সরকার সিনিয়র? লিখছেন কৌশিক মজুমদার…

    কুইন অফ হার্টস মধুবালা

    শিশুশিল্পী হিসেবে মাসিক দেড়শো টাকায় বোম্বে টকিজে কাজ পেয়ে গেল সেই মেয়ে। গোশালায় মাথা-গুঁজে-থাকা আতাউল্লার পরিবারের কাছে সেটাই অনেক। মুমতাজের বয়স তখন বড়জোর বারো কি তেরো। তাঁকেই সারা বুকভরা প্যাড পরিয়ে নিয়ে এসে আতাউল্লা দাবি করলেন, ‘এবার একে হিরোইন বানিয়ে দিন।’ আতাউল্লা জানতেন একবার হিরোইন হতে পারলেই অনেক টাকা, নাম, যশ। বাধ্য মেয়ের মতো বাবার প্রতিটা কথা মেনে চলত সেই মেয়ে। দিনের সেরা সময় ছিল শুটিংয়ের ফাঁকে স্টুডিয়োতে রান্না করা খাবার খাওয়ার সময়টুকু। নামী নায়ক-নায়িকারা অনেকেই স্টুডিয়োর খাবার খেতেন না। কিন্তু বুভুক্ষুর মতো সে-খাবার গিলে চলত মুমতাজ। অনেকদিন পরে বোম্বে টকিজের স্টার অশোককুমার এক স্মৃতিকথায় বলেছেন, ‘আশ্চর্য হয়ে যেতাম স্টুডিয়োর লাঞ্চটাইমে, ওইটুকু বাচ্চা অত খেতে পারে দেখে! মনে হত কতদিনের খিদে বেচারির পেটে জ্বলছে!’

    একদিন আচমকা এমন এক ঘটনা ঘটল যে রাতারাতি মুমতাজ নায়িকা হয়ে গেলেন। পরিচালক কিদার শর্মা ‘বেচারা ভগবান’ নামে এক সিনেমা বানাবেন ঠিক করলেন। নায়িকা তাঁর স্ত্রী রাজ দুলারী। এমনই কপাল, সিনেমার মহরতের দিনই মারা গেলেন দুলারী। একদিকে ব্যক্তিগত শোক, অন্যদিকে গোটা স্টুডিয়োপাড়ায় রটে গেল, এ-ছবি অপয়া। নামী অভিনেতাদের সবাই মুখ ফেরালেন। এমনকী প্রযোজক রঞ্জিত মুভিটোন স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই ছবির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তাঁরা এতে টাকা ঢালবেন না। ছবিটা ততদিনে কিদারের জেদের জায়গা হয়ে গেছে। আতাউল্লার সেই রূপসী কন্যাকে ডেকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বেটি, হিরোইন বনোগি?’ ভীরু-ভীরু চোখে চেয়ে-চেয়ে সেও মাথা নাড়ল। করবে। না করে উপায় নেই যে! বাবা চান তাঁকে হিরোইন হিসেবে দেখতে। নায়ক রঞ্জিত মুভিটোনের এক অখ্যাত ক্ল্যাপস্টিক বয়। এই ছেলেটি আগে কয়েকটি ছবিতে মুখ দেখালেও দাগ কাটার মতো কিছুই করতে পারেনি। জন্মের সময়ে নাম ছিল সৃষ্টিনাথ, পরে বদলে রাখা হয় রণবীর রাজ। বাবা পৃথ্বীরাজ কাপুর ছেলের জন্য তদ্বিরের ঘোর বিরোধী, তাই কাজও জোটে না তেমন।

    ‘নীল কমল’ ছবিতে রাজ কাপুর ও মধুবালা

    সেই রাজ কাপুর আর মুমতাজকে নিয়ে নতুন করে সিনেমা শুরু করলেন কিদার। সিনেমার নাম বদলে রাখলেন ‘নীল কমল’। সিনেমা দারুণ কিছু ব্যবসা না দিলেও যাকে বলে মডারেট হিট। একদিন ডাক এল স্বয়ং মালকিনের কাছ থেকে। দেবিকা রানি। বোম্বে টকিজের সর্বময় কর্ত্রী। আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে হাতে একটা রূপোর টাকা দিয়ে আশীর্বাদ করলেন দেবিকা। বললেন, ‘কাজ খুব ভাল হয়েছে। আমি দেখেছি। তবে এই মুমতাজ নাম এখানে চলবে না। আজ থেকে তোমার নতুন নাম দিলাম… মধুবালা।’

    এরপর মধুবালার গল্প শুধুই উত্থানের। সঙ্গে মিশে আছে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম। স্টুডিয়োতে সবাই তাঁকে ডাকত ‘মেশিন’ নামে। অন্য নায়িকারা যখন নিজেদের গাড়ি থেকে শ্যোফার পরিবৃত হয়ে নামছেন, মধুবালা স্টুডিয়োতে আসছেন ভিড় ট্রেনে বাদুরঝোলা হয়ে। নিজেই নিজের মেক-আপ নিচ্ছেন আর হাসিমুখে তৈরি হয়ে যাচ্ছেন শট দিতে। হয়তো এভাবেই চলত। কিন্তু সাধারণ থেকে অসাধারণে তাঁর উত্থানের গল্প রচিত হত না কোনওদিনই। তা হল কামাল আমরোহীর হাত ধরে। লেখক কামাল এক অসামান্য স্ক্রিপ্ট লিখলেন। পরিচালকও তিনিই। সাসপেন্স-হরর আর প্রেমের কম্বিনেশনে এমন ছবি আগে কোনওদিন হয়নি। সেখানে গোটা সিনেমাজুড়েই আছে এক অপার্থিব মায়াবিনী, যে তার গান আর রূপের মোহে মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যায়। বোম্বে টকিজের প্রথম আর একমাত্র পছন্দ সেকালের এক নম্বর নায়িকা সুরের পাখি সুরাইয়া। ডিরেক্টর কামাল আমরোহী জেদ ধরে বসে রইলেন, ‘ফিল্ম বনেগি তো মধুবালা কে সাথ…।’ নিজের হাতে মধুবালাকে সাজিয়ে স্ক্রিন টেস্ট দেওয়ালেন কামাল আর তাতেই সুপারস্টার সুরাইয়াকে সরিয়ে ‘মহল’ সিনেমার নায়িকা হলেন তখনও জনগণের প্রায় অপরিচিত মধুবালা। কিন্তু ছবির গান তিনি গাইবেন না। গাইবেন উঠতি আর এক নবীন গায়িকা। নাম লতা মঙ্গেশকর। মধুবালার মোহময়ী রূপ আর লতার ‘আয়েগা আনেওয়ালা’ একইসঙ্গে দুই তারকার জন্ম দিল। সে এমন এক অচ্ছেদ্য বন্ধন যে পরের সব ছবিতেই মধুবালা তাঁর কন্ট্র্যাক্ট ফর্মে একটা পয়েন্ট যোগ করতেন। তাঁর গলায় গাইবেন লতাই। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এ-নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি।

    ‘মুঘল-এ-আজম’ ছবিতে দিলীপকুমার ও মধুবালা

    মধুবালা বুঝতে পারছিলেন, তাঁর ভিতরে ক্রমাগত চারিয়ে যাচ্ছিল ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাম ডিফেক্ট। সোজা কথায় হার্টে ফুটোর সমস্যা। জানতেন, খুব বেশিদিন নেই তাঁর হাতে। এই নিয়ে সর্বদা একটা ভয় কাজ করত তাঁর মধ্যে। ফিল্মি পার্টিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, গেলেও বেরিয়ে আসতেন দ্রুত। দূরে যেতে ভয় পেতেন। পাছে অসুস্থ হলে চিকিৎসা না মেলে! চিরকাল বাবার বাধ্য মেয়ে হয়ে থেকেছেন, ভিড় দেখলে ভয় পেতেন, জোরে আওয়াজ সহ্য করতে পারতেন না। শেষে তাঁকে পাহারা দিতে রাখা হয়েছিল বন্দুকধারী রক্ষীও। একদিকে তখন গোটা বোম্বের সব ফিল্মি পত্রিকা থেকে বিদেশের লাইফ ম্যাগাজিন আলো করে রয়েছেন মধুবালা। নিউ ইয়র্কের ‘থিয়েটার-আর্টস’ পত্রিকা তাঁকে নিয়ে লিখেছে, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্টার। কিন্তু তিনি বেভারলি হিলস-এ নয়, বম্বেতে থাকেন। তাঁর মতো ফ্যান ফলোয়িং বিশ্বে কারও নেই।’ অন্যদিকে সারা ভারতজুড়ে তাঁকে নিয়ে কেচ্ছার গুঞ্জন। তিনি নাকি ন-লাখ টাকার বিনিময়ে কামাল আমরোহীকে তাঁর পরিবারের থেকে কিনে নিতে চেয়েছেন কিংবা প্রেমনাথ নাকি তাঁর জন্যেই আত্মহত্যা করতে গেছিলেন।

    তবে সম্পর্কটা অনেকটাই এগিয়েছিল ইউসুফ থুড়ি দিলীপকুমারের সঙ্গে। দিলীপ বিয়ে প্রস্তাবও পাঠিয়েছিলেন। রাজি হননি আতাউল্লা। সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে কে মারতে চায়? আর মধুবালা তো বিদ্রোহী ছিলেন না কোনওদিনই। এখনও বাতাসে গুঞ্জন শোনা যায় দুজনে বুঁদ হয়ে থাকতেন দুজনের মধ্যে, ‘দুজনে মুখোমুখি/গভীর দুখে দুখী, আকাশে জল ঝরে অনিবার/জগতে কেহ যেন নাহি আর’। এদিকে কে আসিফ ষোলো বছর ধরে বানিয়ে চলেছেন তাঁর ম্যাগনাম ওপাস ‘মুঘল-এ-আজম’। ১৯৪৪ থেকে ১৯৬০, এই ষোলোটা বছর একটা মানুষ এক স্বপ্নকে ক্রমাগত লালন করে গেছেন নিজের মধ্যে। তাঁকে বানাতে হবে ভারতের সর্বকালের সেরা সিনেমাটি। টাকাপয়সার বাধা এসেছে পদে-পদে। বহুবার মনে হয়েছে, আর না… এবার বোধহয় হাল ছেড়ে দেবার সময় এসেছে… কিন্তু ‘যব ফিল্ম কিয়া তো ডরনা কেয়া! একটু টাকা হাতে আসতেই গোটা টাকা দিয়ে তুলে ফেললেন মাত্র একটা গানের দৃশ্য। যে-টাকায় তখনকার দিনে গোটা একটা সিনেমা বানানো যেত। সিনেমা যখন বানানো শেষ, তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘আপনার আর কোনও খেদ নেই তো?’ আস্তে-আস্তে মাথা নাড়লেন তিনি, ‘যদি গোটাটা আবার রঙিন করে বানানো যেত…।’ সিনেমার সেটে সেলিম-আনারকলির প্রেম-বিচ্ছেদের রিলের সঙ্গে-সঙ্গে বয়ে চলেছে দিলীপ-মধুর প্রেমের ফল্গুধারা। আনারকলির প্রতিটা ডায়লগ কখন যে মধুবালার নিজের কথা হয়ে যাচ্ছে, কেউ জানে না। ডায়লগ বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে গলা, চোখ ভরে আসছে জলে। যে-প্রেমের কোনও পরিণতি নেই, সেই অব্যক্ত কাহিনি যেন শতবর্ষের পথ বেয়ে আবার ফিরে এসেছে দুই মানুষ-মানুষীর জীবনে। গোটা সিনেমার এই যাত্রা মধুবালার সোয়ান সং হয়ে রয়ে গেছে। যত দিন গেছে, তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। সেটে ক্রমাগত কাশতেন, হাঁপিয়ে যেতেন সেই ভারী পোশাকে; ডাক্তার বলছে এই দেশে আর তাঁর চিকিৎসা হবে না। মধুবালা কাকুতি-মিনতি করছেন, ‘আর ক-টা দিন সময় দিন ডাক্তারসাব। শুটিং শেষ হলেই আমার ছুটি।’

    কিশোরকুমার ও মধুবালা

    ১৯৬০ সালের আগস্ট মাস। আসমুদ্রহিমাচল কাঁপছে ‘মুঘল-এ-আজম’-এর জ্বরে। দশবার-বারোবার এই সিনেমা দেখছেন কেউ-কেউ। ব্ল্যাকাররাও টিকিট না পেয়ে হা-ক্লান্ত। পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালাচ্ছে বক্স-অফিসের সামনের উন্মত্ত জনতাকে। কিন্তু যাঁকে দেখার জন্য এই পাগলামি, তিনি লন্ডনে একেবারে নিভৃতে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। সঙ্গে তাঁর হবু স্বামী কিশোরকুমার। প্রথমদিন থেকেই মধুকে বিয়ে করার জন্য কিশোর পাগল। বার বার না করলেও শোনে না। শেষে একদিন কিনা এসেই বলে বসল, ‘হয় তুমি হ্যাঁ বলো, নইলে আমি এই চলন্ত টেবিল ফ্যানের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেব।’ ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি মধুবালা হ্যাঁ বলতেই কিশোর হা হা হেসে বললেন, ‘ব্যাস! একবার হ্যাঁ বলে দিয়েছ, আর মানা করতে পারবে না!’

    মধুবালা জানতেন, তাঁর শরীরের যা অবস্থা, জীবনে মা হতে পারবেন না। লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর কিশোর মধুকে আতাউল্লার বাড়িতেই রেখে যান। তখন মধুবালা খুব বেশি চলাফেরা করতে পারেন না। একটুতেই হাঁপিয়ে ওঠেন। কারও সঙ্গে কথা হলেই বলতেন, ‘আর তো মাত্র ক-টা দিন। তারপরই আমার রোগের সার্জারি আবিষ্কার হয়ে যাবে। আমিও বেঁচে যাব।’ শরীর ধীরে-ধীরে কঙ্কালসার হয়ে যাচ্ছিল। শুধু মুখখানি ছিল অপাপবিদ্ধ, পবিত্র, ঠিক আগের মতো। খুব চেনা ছাড়া কারও সঙ্গে দেখা করতেন না। চাইতেন না কেউ তাঁকে এই অবস্থায় দেখুক। অন্যদিকে কিশোরের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ছিল। ভালবাসার কাঙালিনি মেয়েটা প্রতি সন্ধ্যায় অপেক্ষা করত কিশোরের জন্য। কিশোর আসতেন না। তখন তিনি জনপ্রিয় নায়ক, গায়ক। রোজ আসার সময় কোথায়?

    ফেব্রুয়ারি এক নিঃসীম প্রেমের মাস। বসন্তের মাস। এই মাসের চৌদ্দ তারিখ ভালবাসার দিনে জন্মেছিলেন মুমতাজ জাহান বেগম দেহলাভি। ছত্রিশ বছরের এক অলীক জীবনে সৌন্দর্যের এই বেঞ্চমার্ক তৈরি করে পরির দেশে যেদিন মিলিয়ে গেলেন, সেই দিনটাও ছিল ফেব্রুয়ারির তেইশ। শোনা যায়, আমৃত্যু প্রতিদিন তাঁর কবরের পাশে বসে হাউহাউ করে কাঁদতেন পিতা আতাউল্লা। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সকল প্রেমকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ‘ইশকের ইমতেহান’ নিয়ে চলেন মধুবালা…          

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook