এই পেশায় দীর্ঘদিন থাকার পরে আমার যে একটা ‘ভিলেন’ তকমা জুটেছে, সেটার ব্যাপারে তিনটে কথা প্রথমে বলে নিই। একটা হচ্ছে, ছোটবেলা থেকেই দিদা বলত, ‘খারাপ লোকের পার্ট করবি না। ওই পার্ট করতে-করতে ওইরকমই হইয়া যায়।’ দু’ম্বর হচ্ছে, ইন্টারভিউতে বাঁধা প্রশ্ন থাকে, ‘এই যে এতদিন ধরে নেগেটিভ চরিত্র করছেন, আপনার মন খারাপ হয় না?’ আমি তখন বলি, ‘আপনারা কি হিরোকে প্রশ্ন করেন, এই যে দিনের পর দিন একইরকম চরিত্র করে চলেছেন, মন খারাপ হয় না?’ আসলে অনেকেই বোঝেন না, অভিনেতার কাছে বিবেচ্য একটাই ব্যাপার, চরিত্রটা কত আকর্ষণীয়। আর তিন হল, আমার মেয়ে যখন বড় হচ্ছে, তাকে অনেক জায়গায় শুনতে হত, ‘তোর বাবা তো ভিলেনের অভিনয় করে, ওই তো সেদিন মিঠুন চক্রবর্তীর হাতে কী মার খেল!’ তাতে তার খুব খারাপ লাগত। সেই কষ্টটা ঘোচাতে আমাকে একরকম করে তাকে ‘কাউন্সেলিং’ করতে হত।
আমার প্রথম যে ব্রেকটা হয়েছিল, তপন সিংহের ‘আজব গাঁয়ের আজব কথা’, তাতে চরিত্রটা নেগেটিভ ছিল, কিন্তু সেটাকে আমি সেভাবে দেখিইনি। একে তো তপন সিংহ নিজে আমাকে ডেকে বলছেন ছবি করতে। এবং বলার ধরন কী অসম্ভব অন্যরকম! যে-লোকটা আমায় ‘অ্যাই, ছবিটা কর বলছি!’ বললেও আমি ধন্য হব, তিনি কিনা বলছেন, ‘আমি একটা ছবি করছি, ছোটদের ছবি, স্ক্রিপ্টটা তুমি পড়ে দ্যাখো, হয়তো তোমার ভাল লাগবে, জানিও ছবিটা করতে চাও কি না’! অমন আভিজাত্য, আত্মমর্যাদাবোধ, মেধা, প্রতিভার মিশেল তার আগে দেখিনি। শুনেছিলাম, ছবিটায় নায়কের ভূমিকায় নানা পাটেকরের অভিনয় করার কথা ছিল। পরে অবশ্য তার জায়গায় করলেন দেবেশ রায়চৌধুরী, তিনি অসামান্য অভিনয় করলেন। আমি তখন বিভিন্ন সিনেমায় খুবই ছোটখাটো রোল করি, অনেক সময় সংলাপও থাকে না। হঠাৎ এমন একটা ছবিতে অভিনয় করতে পেলাম, যেখানে চারিদিকে স্টার, যাঁদের অভিনয় দেখে আমি বড় হয়েছি। সৌমিত্র, নির্মলকুমার, দেবশ্রী রায়, মনোজ মিত্রের সঙ্গে আমি অভিনয় করব! এইসব ভেবেই মশগুল ছিলাম।
বুঝেশুনে নেগেটিভ রোলে অভিনয় করলাম ব্রাত্য বসুর ‘রাস্তা’ ছবিতে। সেটা একটা ‘মিডল অফ দ্য রোড’ ছবি, আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে, অনেকটা রামগোপাল ভার্মার ধাঁচে করা। এই ছবিতে কোনও চরিত্রই খুব ‘ভাল লোক’ নয়। হিরো একজন পেশাদার খুনি, তাকে যে হ্যান্ডল করে ও দলটা চালায়, সে-ই ভূমিকায় আমি অভিনয় করেছিলাম। সত্যি-সত্যি একজন মাফিয়া ডন, যে-লোকটা অনেকগুলো খুনির দলকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছে, তার ভাবভঙ্গি তো আর জানি না। আমি বিভিন্ন সিনেমায় এইরকম চরিত্র যা দেখেছিলাম, সেগুলোর ওপর নির্ভর করে নিজের অভিনয়টা গড়েছিলাম। চোর, পকেটমার, চাকু-ছুরি চালায়, এরকম কিছু লোক অবশ্য আমি দেখেছিলাম, তাদের সঙ্গে মিশেওছিলাম। সত্যি বলতে কী, তাদের সঙ্গ থেকে আমাকে উদ্ধার করতেই আমাকে কিছু বন্ধু জোর করে নাটকের দলে এনে ভিড়িয়ে দেয়। যাতে সন্ধের কিছুক্ষণ অন্তত আমি আজেবাজে লোকের সঙ্গে মিশে বখে না যাই। সেখানে থিয়েটারের ঘর ঝাঁট দিতে দিতে, চা দিতে-দিতে, দেখতে-দেখতে কিছু শিখি। একদিন হঠাৎ একটা রোলে রিহার্সাল দিতে বলা হয়। সেখানে ‘গর্ত’ শব্দটা তিনবার ‘গত্ত’ পড়েছিলাম বলে আমার হাত থেকে স্ক্রিপ্ট কেড়ে নেওয়া হয়। তারপর পরিচালকের বন্ধু বলেন, না না ওকে নাও, ওর চেহারাটা চরিত্রটার সঙ্গে মানাবে। সেই প্রথম নাটকে অভিনয়। ‘রাস্তা’ ছবিতে, সেই নাটকের দলে ঢোকার আগে যাদের সঙ্গে মিশতাম, বলা যায় ছিঁচকে ক্রিমিনাল, তাদেরও কিছু-কিছু হাবভাব হয়তো মিশিয়ে দিয়েছি।
মিঠুন চক্রবর্তী ‘রাস্তা’য় একটা ছোট ‘ক্যামিও’ রোল করতে এসেছিলেন। তাঁর আমার অভিনয় দেখে পছন্দ হল। তারপর তিনি একটা ছবি করলেন টি এল ভি প্রসাদের, সেটায় আমার নাম সুপারিশ করলেন। সেই ’বারুদ’-এ অভিনয়ের সূত্রেই কমার্শিয়াল ছবির বাজারে প্রথম পা দিলাম। ২০০২-এর শেষ সেটা। আমি তো স্ক্রিপ্টই পাইনি। পন্ডিচেরিতে শুটিং ছিল, গিয়ে পৌঁছলাম মাঝরাতে। স্ক্রিপ্ট-রাইটারকে ঠেলে তুলে, চিত্রনাট্য জোগাড় করে, পড়তে শুরু করলাম। বুঝলাম, ইন্টারভ্যালের আগে একটা বড় সিন আছে, যেটায় মিঠুন চক্রবর্তীকে খুব চেঁচামেচি করে হুমকি দিতে হবে, প্রায় কলার ধরে শাসানি আর কি! আমার রোলটা একজন কিং-মেকার’এর। এক সময় সে ভিক্ষে করত, এখন এমএলএ-এমপি-দের তৈরি করে। মিঠুন একজন ঘুষখোর পুলিশ অফিসার, এই কিং-মেকারের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুষ-টুস খান। ছবির মাঝামাঝি দেখা যায়, মিঠুন একটু বেঁকে বসছেন, এবং তখন আমি তাঁকে থ্রেট করতে গেছি, তাও আবার তাঁর বান্ধবীর সামনে। সেই দৃশ্যে প্রচুর তর্কাতর্কি, চাপান-উতোর ছিল। শুটিং করতে গিয়ে দেখি, আমি সাংঘাতিক তড়পালেও, মিঠুনদা প্রায় কিছুই বলছেন না, কোনও তর্ক করছেন না। অবাক হলাম। পরে, শুটিং যখন বেশ কিছুদিন চলেছে এবং প্রাথমিক আড়ষ্টতা কাটিয়ে আমি মিঠুনদার সঙ্গে অনেক গল্পটল্প করছি, জিজ্ঞেস করলাম সিনটার ব্যাপারে। মিঠুনদা বললেন, ‘হ্যাঁ, অনেকগুলো ডায়লগ ছিল আমার, সেগুলো আমি কেটে দিয়েছি।’ আমি তো স্তম্ভিত। চিরকাল শুনেছি, হিরোরা নিজের ডায়লগ কাটতে দেন না। মিঠুনদা বললেন, ‘তোকে কে চেনে? কেউ না। আমাকে সকলেই চেনে। তাই তোকে বাড়াতে-বাড়াতে একটা জায়গায় আমি যদি না নিয়ে আসি, তাহলে আমি লড়ছি কার সঙ্গে? দর্শকের তখনই তো তোর ওপর রাগ তৈরি হবে, যদি তোকে খুব ক্ষমতাবান মনে হয়, আর মনে হয় আমি তোর কাছে হেরেও যেতে পারি।’ তখন বুঝলাম, মিঠুনদা সম্পর্কে যে-গল্পগুলো শুনেছি, তা ভুল, উনি খুব অন্যরকম। বা হয়তো, সব গল্পই ভুল, সব হিরোই অন্যরকম। অবশ্য আগে একটা সিনে অভিনয় করতে গিয়েও দেখেছি, মিঠুনদা কতটা আলাদা। আমি জানতাম, হিরোরা কলার ধরতে দেন না, শালা বলতে দেন না, মুখের সামনে তুড়ি মারতে দেন না। শুটিং-এর সময় আমি যখন মিঠুনদাকে বলেছি, একটা তুড়ি মেরে বললে ডায়লগটা ভাল হবে মনে হচ্ছে, মারব? উনি বলেছেন, ‘দুটো মার।’
‘যোদ্ধা’ নামে একটা ছবি করেছিলাম, পুরুলিয়ায় তার শুটিং। গিয়ে শুনি, আমায় ঘোড়ায় চড়তে হবে। ছবিতে দেখানো হচ্ছে, দেড় হাজার বছর আগে একজন মুসলিম শাসক ভারত আক্রমণ করতে এসেছে। সে শুধু ঘোড়া চালায় না, ছ’মাস ধরে ঘোড়া চড়ে হিন্দুকুশ-টিন্দুকুশ সব পেরিয়ে এসেছে। কাজেই ঘোড়ার ওপরেই খায়-ঘুমোয় লোকটা। তার মতো করে আমায় ঘোড়া চালাতে হবে, এদিকে আমি ঘোড়ায় চড়তে জানিই না। তখন আমায় বলা হল, ‘সকালটা তো আছে, তার মধ্যে শিখে নাও!’ নদিয়া থেকে ঘোড়ারা এল, তারা মোটেই বৈষ্ণব ঘোড়া নয়, তাদের পিঠে তুলে দিয়ে দেড় ঘণ্টা আমায় কসরত শিখিয়ে, রোদটা পড়ে আসতেই বলা হল, এবার শট নেওয়া হবে। শটটা হল, আমার ঘোড়াটা সবার সামনে, তার পিছন-পিছন একটা গোটা দল ঘোড়া ছুটিয়ে আসছে। একটা টিলা-মতো জায়গার ওপর উঠে ওরা থামবে। তার মানে আমাকে একটা মার্ক-এ দাঁড়াতে হবে। অর্থাৎ আমাকে শিখতে হচ্ছে ঘোড়াকে ডাইনে-বাঁয়ে ঘোরানো, তারপর একেবারে নির্দিষ্ট জায়গায় থামানো। এবার, ঘোড়াকে থামানোর সময় যদি তার বল্গায় টানটা একটু জোরে হযে যায়, তখন ঘোড়া দু’পায়ে দাঁড়িয়ে উঠবে। মানে, টানটাও একেবারে মেপে দিতে হবে। সে তো পারলাম। ছবিটায় গল্পটা দুই জন্মের। মানে, পূর্বজন্মে যারা হিরো-ভিলেন ছিল, আবার জন্ম নিয়েও তারাই সেসব হয়েছে। নতুন জন্মে আমি একজন জেলে। ফলে এরপর শুটিং-এ মিনিট পাঁচেকের মধ্যে আমাকে জাল ফেলা শিখতে হল! জালটা যখন ছোড়া হয়, পুরো জালটা গোল হয়ে ছড়িয়ে যায় এবং দেখতে খুব সুন্দর লাগে। সেভাবেই ছুড়তে হল, কারণ সেটাই ক্যামেরার দাবি। এই যে এগুলো পেরে গেছি, তা আমাকে খুব তৃপ্তি দেয়। একজন অভিনেতা তো আর সত্যি-সত্যি আর একটা পেশা তক্ষুনি শিখে ফেলতে পারে না। আমায় যদি একজন কুমোরের অভিনয় করতে হয়, আমি তো কখনও সেই দক্ষতায় একটা মাটির কলসি বানাতে পারব না, যা একজন কুমোর পারবেন, কারণ তিনি ছোটবেলা থেকে তো ওই কাজটাই করে চলেছেন। তাহলে আমাকে কী করতে হবে? খানিকক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে কয়েকটা বৈশিষ্ট্য খুঁজে নিতে হবে। শরীরের কয়েকটা ভঙ্গি, ঘাম মোছার ধরনটাও হয়তো আলাদা, কাজ শেষে হাত মোছার হয়তো একটা নির্দিষ্ট রকম আছে। এরপর, ভয় না পেয়ে, সেগুলো প্রয়োগ করতে হবে, এবং সেইদিকে মন দিতে গিয়ে অভিনয়টা ভুললে চলবে না। ‘বারুদ’ করতে গিয়ে, ১৫ মিনিটে আমাকে স্পিডবোট চালানো শিখতে হয়েছে। এবং এগুলো শটের আগে বলা হয় খুব সহজে, ‘যান, এটা করবেন, ওটা করবেন, তারপর স্পিডবোট চালিয়ে বেরিয়ে যাবেন।’ যেন, ভাত খেতে-খেতে তরকারি মাখবেন। এদিকে পুরোটা এক শটে তোলা হচ্ছে, আমি এসে লাফিয়ে পড়ছি, স্পিডবোট অন করছি, এবং এসব বেশ ভজঘট টেকনিক। এটাও মাথায় রাখতে হবে, তখন সেলুলয়েডে শুটিং হচ্ছে, মানে, আমার জন্য শট এনজি হলে, তার অপরাধবোধও কাজ করবে।
‘বাদশাহী আংটি’তে অভিনয় করার সময়, পাইথন সামলানো শিখতে হল। সাপের ওপর একটা কাপড় ফেলা হয়, তখন সাপ উঁচু হয়ে ওঠে, তারপর ইলেকট্রিক তার যেভাবে বার করা হয়, সেভাবে ঠেলে-ঠেলে বের করা হয়। হাজারটা ঝামেলা আছে। সাপ খুব অলস, সে যদি পেট ভর্তি করে খবার খেয়ে থাকে, সে গায়ে বমি করে দেবে এবং নড়াচড়া করবে না। আবার তার খিদে পেয়ে থাকলে সে খুব বিরক্ত থাকে, তাকে নিয়ে টানা দু’দিন শুট করা বেশ শক্ত হয়ে পড়বে। আমি যদি ভয় পেয়ে ফেলে দিই, বা ঠিক করে ধরতে না পারি, সাপ আমার হাত থেকে স্লিপ করে পড়বে এবং স্টুডিও ফ্লোরে কোথায় গিয়ে লুকিয়ে পড়বে কে জানে! আবার আমি দেখছি, যিনি আমাকে শেখাচ্ছেন, তিনি সাপের সামনে হাত নিয়ে গিয়েই, ভীষণ দ্রুত হাতটা সরিয়ে নিচ্ছেন। যেন বিরাট ঝুঁকি আছে। আমি বললাম, ‘পাইথনের তো বিষদাঁত নেই?’ উনি বললেন, ‘না, নেই।’ ‘তাহলে কি কামড়ে দেয়?’ ‘হ্যাঁ, মাংস তুলে নেয়।’ বাঃ, প্রথমেই চমৎকার ভরসা পাওয়া গেল। শুটিং-এর সময় পাইথনের মুখটা ধরে লক করতে হবে। আগে নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে শুট করা হত, মুখ আটকে দেওযা হত। এখন তো তা হবে না। পদ্ধতিটা হল, নীচের চোয়ালটা একটা বুড়ো আঙুল দিয়ে ধরতে হবে, বাকি আঙুল দিযে ওপরের চোয়াল। চাপ বেশি হলে, সাপ মরে যাবে। কম হলে, পিছলে বেরিয়ে যাবে। আমাকে প্রথমে বলা হয়েছিল, হাতে ধরতে হবে না, লোহার একটা কাঠি দিয়ে সাপটাকে তুলতে পারো। কিন্তু আমার মনে হল, লোকটা ভীষণ ভালবাসে এসব সরীসৃপ, সে কেন কাঠি দিয়ে তাকে ধরবে? মিনিট পনেরো শিখে, সাপ হাতে নেওয়ার শট দিতে হল। একটা শটে আমি সাপটাকে তুলে নায়কদের দেখাচ্ছি আর বলছি, পাইথন। রিহার্সাল হয়ে গেছে, কিন্তু আসল টেক-এর আগে আমার মনে হল, না, বাড়াবাড়িটা যথেষ্ট হয়নি। তখন আমি ঠিক করলাম, সাপটার মুখে একটা চুমু খেতে হবে। যেই চুমু খেলাম, সাপটার মুখের সামনে যে ফুটোটা থাকে, তা দিয়ে তার চেরা জিভটা সুড়ুৎ করে বেরিয়ে এল। অর্থাৎ এক সেকেন্ড মুখ সরাতে দেরি হলে, সে আমার মুখটা চেটে দিত।
তার মানে অবশ্য এই নয় যে অভিনয় করতে গিয়ে আমি অসাধ্য সাধন করতে পারি। ক’দিন আগে নেটফ্লিক্সে একটা কাজ করলাম, হিন্দিতে। এবং তা করতে গিযেই প্রতিজ্ঞা করলাম, আর হিন্দিতে কোনও কাজ নয়। কারণ ভাষাটা মনে রাখতে গিয়েই এত এনার্জি চলে যাচ্ছে, অভিনয়ে মন দিতে পারছি না। আমি যেটুকু অভিনয় করতে পারি, ভাষার উপর দখলটা তার একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে হয়। বাংলা ভাষার ছবিতে যদি আমি একটা লাইন মাঝখানে ভুলে যাই, বা মনে হয় সংলাপটা যেন ঠিক জমছে না, আমি যে তখন নিজে মাথা খাটিয়ে ওটাকে ম্যানেজ করতে পারি, সেটা আমাকে খুব বড় জোর দেয়। তাই হিন্দিতে কাজ করতে গিয়ে যখন দেখলাম, সেই জোরটা হারিয়ে কাজ করছি, তখন ভাবলাম, নিশ্চয়ই অনেক ভাষায় কাজ করা খুব ভাল, হিন্দিতে কাজ করলে প্রাপ্তির অংশও প্রচুর, কিন্তু সব ভাল তো সবার জীবনে হয় না, তা আমার নাহয় বাংলাতে কাজ করেই চলুক। অভিনয়-জীবনে হেলিকপ্টার চড়েছি, এমনকী দুবাইতে ছাদহীন রোলস রয়েসে চড়েও শট দিয়েছি, কিন্তু গড়গড়িয়ে হিন্দি বলার মতো বড় ভিলেন হতে পারলাম না!
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র