নিৎসে আজ এসেছিল
নিৎসে আজ এসেছিল,
নিৎসে আমায় ভীষণ ভালবাসে।
নিৎসের তৈরি কাগজের নৌকোয়
আমরা বসবাস করি ইদানীং।
এসো জোনাকিভরা নিৎসে
মনে হয় তোমার কানের দুলের
ভিতর হাওয়ার,
হাওয়াদের হ্যাজাক জ্বলছে
আমার খিদে পেয়েছে নিৎসে
তোমার মতো যুবক-যুবক রোদে
আমার খিদে বাড়ছে আরও
নিৎসে তুমি মলয়বাতাস, তুমি নিষ্পেষণ।
নিৎসে তুমি বৃদ্ধ বজ্রপাত
নিৎসে আমার আলোচোরের বাড়ি
আগুন ধরে গেছে,
নিৎসে নেভাও তুমি আমার স্বভাব,
আমার অজ্ঞানভাব নিভিয়ে দাও মা…
তোমার মুখ
তোমার মুখ সিনেমাহলের পোস্টারের মতো লাগে। দেখি বৃষ্টিতে ভিজে আছ, ছিঁড়ে আছ।
তুমি ভিজতে-ভিজতে দূরে চলে গেছ।
আমি ঠাকুরকে ডাকি। বলি, তোমার যেন কোনও বিপদ না হয়। তুমি যেন ঠিকঠাক চিত্রনাট্য অনুযায়ী গল্পের ভিতর দিয়ে স্বামী ও সন্তান ছুঁয়ে দি এন্ডে পৌঁছতে পারো। ওগো সিনেমার নায়িকা, আমার চোখের জল তোমাকে ছুঁয়ে আজ সমাপ্তিতে যথাযথ জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছে, তখনও আমার জাতীয় সঙ্গীত মন ভিজে ভিজে তোমার বর্ষাকে ছুঁয়েছিল…
এত লোভ
এত লোভ নিয়ে জন্মেছিলাম!
হ্যারিকেনের আলোয় আমার লোভ আরও জ্বলে ওঠে।
তুমি নির্লোভ। সুগার খাও না। বিদ্রোহ খাও না।
আমি খাই। যাই। গুনগুন করে ফুলে বসি। মধু।
মধুপুর যাই নাই। মধুপুরের বাজনা তবু প্রভুর মতন ভিতরে বাজেন।
আলোকাঠে পুড়ি। লোভ পোড়ে। বাসনাগাছে পক্ষীর মন। সাধ জাগে।
রাত জাগে নাইটগার্ড, আকাশের তারা।
তুমি নির্লোভ। আমি মধুর সন্ধানে মধুপুর যাই।
বরফের নীচেই হাবুদের উনুন জ্বলছে,
দাউদাউ করে…
ও অসুন্দর
ও অসুন্দর ও কুৎসিত আমি তোমায় সুন্দর করে ভাবব।
তোমার অন্ধকারে এই মন দিলাম, গান দিলাম, আলো দিলাম— ফিরত চাহি না কিছু, ও আমার নখ দাঁত দ্বেষ।
আমিই সেই অসুন্দর, যাকে তুমি সুন্দরের দিকে নিয়ে যাচ্ছ। আলোর দিকে।
আমি, আমি নই। আমি হলাম তুমি।
এ মহাসাগরে তুমি দীপ জ্বেলেছ নখ দিয়ে, দাঁত দিয়ে, সুবিনয় রায়-এর গান দিয়েও হে আমার প্রদীপসুন্দর!
হে আমার রোদ বৃষ্টি শিশিরের উপস্থিত ভালবাসা!
দমবন্ধ নিত্য থেকে আমি অনিত্যের চূড়ায় ওই চূড়ান্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখা দেখি, কাঞ্চনজঙ্ঘার ক্রন্দনরত উল্লাস দেখি রোজ…
সে
সে আমার কে হয়? এই জিজ্ঞাসা নিয়ে আমি একটা ছোট, কিশোর রোদের পাশে এসে দাঁড়ালাম।
আমি কিশোর রোদকে বলি, তুই-ই কি আমার সে হোস?
কোনও কিছুকেই আমার পাথর মনে হয় না।
সূর্যের যাতায়াতের মতো সে পাশে আছে।
সব কথা থেমে গেছে। কথা সব পাথরের পাশে পাথর হয়ে পাহাড় গড়েছে। তবু তুমি জীবন, জীবন্ত ওষুধের শিশি, মাঝে মাঝে গান হয়ে বেজে ওঠো, বেজে ওঠো সে হয়ে।
হাসপাতালের উদ্বিগ্ন আলো এসে পড়েছে আত্মমগ্ন অন্ধকারের গায়ে… সে আমার কে হয় গো আলো? সে আমার?
মুষলধারায় রোদ পড়ে ঝমঝমিয়ে আমাদের
সংসারের ওপর। সে কি তবে আমার রোদ হয়?
সে? আমার রোদ? চন্দ্রের যাতায়াতের পাশে
আয় তবে সহচরী-সহচরী খেলা খেলি।
আয় সংসার-সংসার খেলার পাশে
তাঁকে খুঁজি, তাঁকে… বাহিরে উপন্যাসের মতো
রোদ ঝরিতেছে…
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র