ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • আমাদের মজ্জায় একুশ

    সাকিব আল হাসান (February 20, 2021)
     

    ভাষা দিবস বললে আমার প্রথম মনে পড়ে ছোটবেলার দিনগুলো। এই দিনটা সব্বার কাছে একটা বিরাট উৎসব ছিল। তখন যদিও আমি ভাষা আন্দোলনের মর্ম ততটা বুঝতাম না। কিন্তু জানতাম, বাঙালি হিসেবে এবং বাঙালির কাছে এই দিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আর গর্বের দিন। ভাষা দিবসে ফুল দিয়ে সাজানোর চল ছিল সব জায়গায়। আর সেই জন্য ছোটবেলায় আমরা খুব এর-ওর বাড়ি থেকে ফুল চুরি করতাম। সেই দিনটায়, ফুল চুরি করার মধ্যেও যেন একটা মহৎ ব্যাপার ছিল, মনে হত বীরের মতো, সত্যিকারের বাঙালির মতো কিছু একটা করছি। একটা অদ্ভুত উত্তেজনা থাকত। ফুল চুরি করে ঘরদোর সাজাতাম।   

    যখন বড় হয়ে আস্তে আস্তে ভাষা দিবসের তাৎপর্য বুঝতে শিখলাম, তখন খুব গর্ব হত। এখনও সেই গর্ব হয়। সারা পৃথিবীতে আর কোনও জাতি নেই, যারা কেবল ভাষার জন্য একটা আন্দোলন করেছে, ধর্ম, বর্ণ বা অন্য কোনও কারণে নয়। ভাবনার দিক থেকেও এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আজ যখন দেখি, আমাদের ভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পরিগণিত হয়, তখন কেবল বাঙালি বলে গর্ব হয় না, বাঙালিরা এই আন্দোলন করে যে প্রত্যেকের মাতৃভাষাকে এমন সম্মান দিতে পেরেছে, সেটা ভেবেও খুব গর্ব হয়। 

    আজ যখন দেখি, আমাদের ভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পরিগণিত হয়, তখন কেবল বাঙালি বলে গর্ব হয় না, বাঙালিরা এই আন্দোলন করে যে প্রত্যেকের মাতৃভাষাকে এমন সম্মান দিতে পেরেছে, সেটা ভেবেও খুব গর্ব হয়। 

    আবার, বাংলা বলার কিছু বাড়তি সুবিধেও আছে। বাঙালিরা বাঙালিদের মধ্যে বাংলায় কথা বলবে, এটা যেমন আদান-প্রদানের একটা অতি স্বাভাবিক ঘটনা, তেমনই কিছু ক্ষেত্রে একেবারে মোক্ষম কৌশলও বটে। কীরকম? যখন আমরা কোনও বিদেশি দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামি, ধরা যাক ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া, আর নিজেদের মধ্যে বাংলায় বলতে থাকি এবার কী করব, কাকে কীভাবে বল করব, এই খেলোয়াড়ের দুর্বলতাটা কী বলে মনে হচ্ছে, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা কিছুই বুঝতে পারে না। ওদিকে, তারা যখন ইংরেজিতে নিজেদের মধ্যে এইসব কথা বলে, তা আমরা দিব্যি বুঝতে পেরে যাই। অবশ্য তারাও অনেক সংকেত ব্যবহার করে, বা ফিসফিস করে কথা বলে, যা আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু মজা লাগে, একটু সুবিধেজনক অবস্থানে থাকি বলে। আবার শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যখন খেলি, তখন ওরা কী বলছে আমরা বুঝি না, আর আমরা কী বলছি ওরা বোঝে না। এই হল মাতৃভাষার সুবিধে। 

    কিন্তু ভারতের সঙ্গে যখন খেলা হয়, তখন দু’পক্ষেরই অসুবিধে। এক তো আমরা সব্বাই হিন্দি বুঝি। আর বাংলা ভাষাটা যেহেতু হিন্দির কাছাকাছি, তা-ই ওরাও বেশ বোঝে, আমরা কী বলছি। আর দলে যখন ঋদ্ধিমান, মনোজ তিওয়ারি, বা দাদার মতো লোকজন থাকে, তখন তো আরও ঝামেলা। ওরা তো বাংলাও বোঝে। তখন এতজন বাংলা জানে বলে গর্বও হয়, আবার গুগলি দেওয়ার পরামর্শটা বোলারকে এক্ষুনি কী করে দেব, ভেবে ধন্দেও পড়ে যাই। তবে পড়শিরা তো এরকমই হবে। আর বিপক্ষের খেলোয়াড়ের সঙ্গে মাতৃভাষায় আলাপ করার আরামটা এমন একটা আশ্চর্য পাওনা, তা সব খেদই পুষিয়ে দেয়।  

    এ বছর বাংলাদেশে হয়তো ২১ ফেব্রুয়ারি অন্যান্য বছরের মতো করে পালিত হবে না, কারণ করোনা আমাদের গত এক বছর স্বাভাবিক প্রাত্যহিক জীবন থেকে বেশ কিছুটা সরিয়ে নিয়েছে, কিন্তু তাতে কী? অমর একুশ আমাদের মজ্জায় মজ্জায়, তাকে তো আমরা রোজই পালন করি।     

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook