ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • মোরে বারে বারে ফিরালে


    সারস্বত সেন (April 13, 2024)
     

    দিন কয়েক আগে সকালের কাগজ নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে একটা খবরে চোখ আটকে গেল: এক বিখ্যাত মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা আর এক জনপ্রিয় ই-কমার্স সংস্থাকে ক্রেতা-সুরক্ষা আদালত প্রতারণার জন্য শাস্তি দিয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার বিতণ্ডা প্রায়ই আদালতের চৌকাঠ মাড়ায়, এ তো নতুন কিছু নয়! শুধু এ-ক্ষেত্রে অপরাধের ধরনটা অভিনব— ওই ই-কমার্স সংস্থা থেকে নতুন একটা স্মার্টফোনের অর্ডার দিয়েছিলেন একজন ক্রেতা; ধরে নিই তার নাম ‘মধুবাবু’। সময়মতো ডেলিভারি হল; তবে বাক্স খোলার পরে তার বুঝতে দেরি হল না যে, ফোনটা ঠিক ঝাঁ-চকচকে নতুন নয়। দেখতে নতুন লাগছে ঠিকই, তবে খুঁটিয়ে দেখলে বা ব্যবহার করলে বোঝা যাচ্ছে যে ফোনটি একেবারে অব্যবহৃত বা আনকোরা নতুন নয়; বরং বলা চলে ব্যবহারের পর ফের নতুনের মতো করে দেওয়া হয়েছে, ইংরেজিতে এখন চলতি যাকে বলে রিফারবিশড। রিফারবিশড সেকশন-এ ব্যবহৃত অথচ খুঁতহীন অবস্থায় থাকা ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনও পণ্য, নতুন করে প্যাকেজিং করে, অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করা হয়। মানে ‘মধুবাবু’ খরচ করলেন নতুন যন্ত্রের জন্য, কিন্তু পেলেন আগেই ব্যবহার করা হয়েছে এমন একটা যন্ত্র। ই-কমার্স আর মোবাইল সংস্থা, দুজনেই জানাল স্মার্টফোনটা ‘রিটার্ন ও রিপ্লেস’ করতে তারা অপারগ। আদালতে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে অবশ্য ‘মধুবাবু’ই শেষ হাসি হাসলেন। আইনি প্রক্রিয়ায় প্রমাণিত হল যে, মুঠোফোনটি যখন ব্র্যান্ড নিউ ছিল, তখন ‘যদুবাবু’ নামে অন্য একজন ক্রেতা সেটা কিনেছিলেন। তারপর যে কোনও কারণেই হোক, কিছুদিন ব্যবহার করে ‘যদুবাবু’ সেই স্মার্টফোনটা যেখান থেকে কিনেছিলেন, সেই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মেই রিটার্ন করে দিলেন। সংস্থাও বাক্যব্যয় না করে ফোনটা ফেরত নিল, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ‘যদুবাবু’র অ্যাকাউন্টে রিফান্ডও চলে গেল।        

    এরপর সেই ফেরত-যাওয়া ফোনের মান যাচাই করে, নতুন মোড়কে সজ্জিত করে পুনরায় তাকে তুলে রাখা হল ‘নতুন ফোন’ হিসেবে বিক্রির জন্য; উচিত ছিল রিফারবিশড সেকশন-এ রাখা, কিন্তু সেটা করা হল না। প্রথম ক্রেতা ‘যদুবাবু’র থেকে ফোনটা ফেরত নেওয়ার পরে, মান যাচাইয়ের সময়ে স্মার্টফোনটা খুবই ভাল অবস্থায় আছে দেখে, ই-কমার্স সংস্থা সেটাকে আর রিফারবিশড সেকশনে না দিয়ে, অনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নতুন ফোন বলে দ্বিতীয়বার বিক্রি করল। তা হলে দ্বিতীয় ক্রেতা মানে ‘মধুবাবু’ যে ফোনটা নতুন ভেবে কিনলেন, সেটা আদতে নতুন নয়। ভরা আদালতে প্রস্তুতকারী সংস্থা এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটিকে ভর্ৎসনা শুনতে, জরিমানা গুনতে হল। এত বড় সংস্থা, এত নামডাক, কয়েক হাজার মুনাফার জন্য তারা ক্রেতার সঙ্গে এই ধরনের সূক্ষ্ম প্রতারণা করল কেন?    

    দোকানে গিয়ে সরাসরি কিছু কিনলে, সাধারণত সেটা ফেরত দেওয়ার প্রবণতা একটু কম। অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সেই রিটার্নম্যানিয়া প্রায় তিনগুণ। অফলাইন শপিংয়ে কায়িক শ্রম, সময় ব্যয়, যাতায়াতের খরচ-এর মতো কিছু ব্যাপার কাজ করে। সে কারণেই কি ফেরত দেওয়ার প্রবণতা কম? তা হলে কি কেনার পর ফেরত দেওয়ার সংস্কৃতি পুরোটাই খামখেয়ালিপনা? হয়তো যে জামা, বা জুতোটা কিনেছি সেটা এক-সাইজ বড় হলে ঠিক হত; বা সদ্য কেনা যে হেডফোনে গান শুনব ভেবেছিলাম, ব্যবহার করতে গিয়ে দেখলাম সেটা খারাপ। সেসব ক্ষেত্রে তো সত্যিই রিটার্ন-রিফান্ড বা রিপ্লেস ছাড়া উপায় নেই। কেউই চায় না, কষ্টের টাকা দিয়ে খারাপ জিনিস কিনতে। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি ছাড়াও অনেকেই আছেন, যারা দিনরাত মুঠোফোনের জগতে ডুবে থাকেন, অনলাইনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনাকাটা করেন, আবার পরক্ষণেই মত বদলে রিটার্ন দিজ আইটেম বোতামে আঙুল ছোঁয়ান। এটুকু করতে, মোবাইল ডেটা খরচ হওয়া ছাড়া তো বিশেষ কষ্ট নেই। মনে সাহস জোগায় অধিকাংশ ই-কমার্স সংস্থার ‘ফ্রি রিটার্ন পলিসি’। আর আছেন কিছু দুঃসাহসী, অসাধু উপভোক্তা যারা এই ‘নেওয়া-ফেরত দেওয়া’ ব্যাপারটাকে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন; অসাধু ব্যবসায়ী শুনেছেন এতকাল, কিন্তু অসাধু খরিদ্দার!      

    আমাদের খামখেয়ালিপনা কিন্তু এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা আর তাদের কর্মীদের আর্থিক সংকটের খাদে নিয়ে যাচ্ছে। এত সমস্যার পরেও তা হলে সংস্থাগুলো ফ্রি-রিটার্ন চালিয়ে যাচ্ছে কেন? তারা কি জানে না যে বহু ক্ষেত্রেই তারা রিটার্ন ভাঁওতার শিকার।

    শপিংয়ের দুনিয়ায় এই খদ্দেরদের হাতিয়ার ওয়ারড্রোবিং। কী এই ওয়ারড্রোবিং? নাম শুনেই মালুম হয় পোশাক-আশাক, জামা-জুতো সম্পর্কিত কিছু। মনে করুন, সামনে কোনও অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ আছে বা কোনও পার্টিতে যাওয়ার প্ল্যান। সেই মতো অনলাইনে পছন্দসই অর্ডার দিলাম, সময়মতো আমার দুয়ারে ডেলিভারিও হয়ে গেল। পার্টিতে সেই জামাজুতো পরে, নেচেগেয়ে সবার নজর কাড়লাম। ভোরবেলা হা-ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে, তড়িঘড়ি সেই জামাকাপড় ছেড়ে, যত্ন করে ভাঁজ করে আবার ডেলিভারি প্যাকেটে রেখে দিলাম, বালিশে মাথা রেখে চোখ বুজে আসার আগে রিটার্ন দিস আইটেম অপশনে আঙুল ছোঁয়ালাম। এত ধকলের পরে ফেরত দেওয়ার কারণ লেখার মতো কি আর শক্তি থাকে! প্রথম সারির ই-কমার্স সংস্থাগুলোর রিটার্ন পলিসি খুবই নমনীয় এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিনামূল্যে হয়। সময়মতো ডেলিভারি এক্সেকিউটিভ এসে দুয়ার থেকে প্যাকেজ নিয়ে ভার লাঘব করল। দিন সাতেকের মধ্যে অ্যাকাউন্টে খরচা হওয়া টাকাও ফেরত চলে এল। গাঁটের একটা পয়সাও খরচা না করে, ঝকঝকে নতুন জামাজুতো ব্যবহার করলাম, অবশ্যই ট্যাগগুলো না খুলে। এমনকী এত কিছুর জন্য কোনও ভাড়াও দিতে হল না। মোদ্দা কথা, নিজের উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য নীতি-নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে নিখরচায় একটা ব্র্যান্ড নিউ প্রোডাক্ট-এর টেস্ট-ড্রাইভ করলাম। অসাধু ক্রেতাদের ওয়ারড্রোবিং-এর ধাক্কায় প্রতি বছর রিটেলাররা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হন। সেই আর্থিক ধাক্কা বড় সংস্থা সামলাতে পারলেও, মাঝারি ও ছোটমাপের ব্যবসায়ীরা পারেন না। শেষে লাভের মুখ না-দেখা ব্যবসায় ঝাঁপ ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।     

    ক্রেতার ফেরত পাঠানো পণ্যটিকে দ্বিতীয়বার বিক্রি করার জন্য রিটেলাররা রিভার্স লজিসটিক্স-এর শরণাপন্ন হন। প্রথমবার ডেলিভারি, যাকে ফরওয়ার্ড লজিসটিক্স বলা হয়, সেটা করার জন্য যা-যা প্রয়োজন এবং খরচা হয়েছিল, ফেরত নেওয়ার সময়েও সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা। খালি উৎস আর গন্তব্যস্থল বদলে গেল। তবে রিভার্স লজিসটিক্স-এর ক্ষেত্রে খরচা আরও বেশি, আর্থিক ক্ষতিও মাত্রাছাড়া। ক্রেতার ফেরত পাঠানো বা পরিত্যাগ করা এই পণ্যসামগ্রী এরপর কোথায় যায়? অধিকাংশই ফেরত যায় সংস্থার গুদামে; আবার বিক্রি করার জন্য। ফেরত-যাওয়া পণ্যের মান যাচাই করে, সেটাকে আবার নতুনের মতো করে বিক্রয়যোগ্য করে তোলার জন্য সংস্থার প্রয়োজন হয় আরও বেশি কর্মী— তৈরি হয় একটা সমান্তরাল ওয়ার্কফোর্স, জন্ম নেয় নতুন সাপ্লাই-ডিমান্ড-এর গল্প। সমান্তরাল সেই অর্থনীতি দেখতে অনেকটা ফরওয়ার্ড লজিসটিক্স-এর লেজুড় রিভার্স লজিসটিক্স-এরই মতো।

    এ তো তা-ও কিছুটা পাপমোচন। কিন্তু ফেরত আসা যে পণ্যগুলো একেবারেই বিক্রি করার মতো অবস্থায় থাকে না? তাদের ভবিতব্য? সেগুলোর স্থান হয় ল্যান্ডফিল-এ— আবর্জনার সেই পাহাড় প্রতিনিয়ত পৃথিবীর কী ক্ষতি করছে তা নিয়ে বিশ্বকে সচেতন করতে করতে পরিবেশবিদরাও হতোদ্যম। অনলাইনে কেনা সমস্ত পণ্যের অন্তত ৩০%-ই ক্রেতা ফেরত দিয়ে দেন, যে ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায় রিভার্স লজিসটিক্স আমাদের পরিবেশের উপর সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও সুদূরপ্রসারী চাপ সৃষ্টি করে। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত শিল্পের দূষণ আজকের জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণায়ন-এর অন্যতম কারণ। পানীয় জলের ২০% দূষণের জন্য দায়ী টেক্সটাইল শিল্প; গোটা বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের ১০%-এর পিছনেও তাদের অবদান। সরকারি স্তরে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে ঠিকই, তবে আশার আলো ক্ষীণ। বছরে প্রায় ২.৪ কোটি মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী আমাদের পণ্য কিনে সেটা ‘ফেরত দেওয়ার প্রবণতা’।                 

    ‘ডিজেল’-এর সেই বিখ্যাত ক্যাম্পেন

    লকডাউনের সময় থেকেই অনলাইনে জিনিসপত্র কেনার প্রবণতা বেড়েছে হু হু করে। মানুষের পেশাগত ব্যস্ততা যত বাড়বে, অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা তত বাড়বে বই কমবে না। পাল্লা দিয়ে বাড়বে রিটার্ন-রিফান্ড বা রিপ্লেস করার ইচ্ছেও। অতিরিক্ত ভোগবাদ-এর এই যুগে দাঁড়িয়ে উপায় তা হলে কী? রিটার্ন-এর অসুখ থেকে বড় বিক্রেতারাই ছাড় পাচ্ছে না, সেখানে খুচরো বা ছোটমাপের বিক্রেতাদের যে ব্যাপক হারে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তা বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। এর প্রভাব পড়ছে সেই সংস্থার কর্মীদের উপরেও। ভুললে চলবে না, এইসব সংস্থায় আমার-আপনার মতো মানুষরাই চাকরি করেন। আমাদের খামখেয়ালিপনা কিন্তু এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা আর তাদের কর্মীদের আর্থিক সংকটের খাদে নিয়ে যাচ্ছে। এত সমস্যার পরেও তা হলে সংস্থাগুলো ফ্রি-রিটার্ন চালিয়ে যাচ্ছে কেন? তারা কি জানে না যে বহু ক্ষেত্রেই তারা রিটার্ন ভাঁওতার শিকার। কিছু ক্ষেত্রে বিক্রি হওয়া পণ্য ফেরত নিতে অতিরিক্ত মাশুল নিচ্ছে ঠিকই; তবু সব জেনেবুঝেও মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে কারণ ব্যবসা ও মুনাফা বড় বালাই।

    দেখা যাচ্ছে ক্রেতারা সেই সংস্থা থেকেই কেনাকাটা পছন্দ করেন যেখানে রিটার্ন পলিসি নমনীয় বা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফ্রি। তলিয়ে দেখলে এই ছাড় দেওয়ার নীতিই কিন্তু আজকে এক শ্রেণির ক্রেতাদের মধ্যে ব্র্যাকেটিং বা ওয়ারড্রোবিং-এর মতো অনৈতিক, অসাধু প্রবণতাকে জিইয়ে রাখছে। প্রতিবছর অনলাইনে কেনা পোশাক-আশাক-এর ৪০%-ই ‘ফেরত’-এর তালিকা ভারী করে। অবশ্য এত কিছুর পরেও ক্রেতাদের রিটার্ন-রিফান্ড প্রবণতাকে গ্লাস-অর্ধেক-ভর্তি-র দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছে কিছু বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড। ‘ডিজেল’-এর কথাই ধরুন। তাদের বক্তব্য ওয়ারড্রোবিং-এর মতো প্রবণতাকে যদি বন্ধ না-ই করা যায়, তা হলেও ক্ষতি নেই। বরং তাদের ক্যাম্পেন স্লোগান— এনজয় বিফোর রিটার্নিং! বিনাব্যয়ে জামাকাপড় পরুন, তারপর ফেরত দিয়ে দিন, শুধু পোশাকের ট্যাগ না খুললেই হল! এ দেশে এখনও শুরু না হলেও বিদেশে নিয়ামক সংস্থাগুলো যেখানে ‘সিরিয়াল রিটার্নার’দের বয়কট কিংবা জরিমানা করার কথা ভাবছে, সেখানে সবার উলটো পথে হেঁটে ‘ডিজেল’-এর সেই বিজ্ঞাপন ফ্যাশন, বিজ্ঞাপনী দুনিয়া ও তামাম বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। লক্ষ্মীলাভও হল সংস্থার; বিক্রি বাড়ল প্রায় ২৪ %! অনলাইনে তাদের পণ্য ফেরত দেওয়ার প্রবণতা কমল ২১ %, দোকানে বা অফলাইনে ৯%।         

    ক্লিক অ্যান্ড কালেক্ট, নেক্সট ডে ডেলিভারি, ডোরস্টেপ ডেলিভারি, ফ্রি রিটার্ন— এইসব শব্দবন্ধ এখন আমাদের রোজকার জীবনের অংশ। অন্তত এ দেশের যেটুকু জনসংখ্যা ডিজিটাল ইন্ডিয়ার অন্তর্গত। লকডাউন-এর সময় থেকেই জীবনের ব্যস্ততার ছায়ায় বাড়িতে বসেই অনলাইনে পছন্দের জিনিস অর্ডার করছি, বহুক্ষেত্রে কিছুদিন পরেই রিটার্ন-এর আবেদন করছি। কখনও সেই রিটার্ন যুক্তিসংগত, কখনও অপ্রয়োজনীয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ থাকুক বা না থাকুক, রিটার্নম্যানিয়া যে ব্যবসা ও বৃহত্তর ক্ষেত্রে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করছে, নিরন্তর চর্চায় সেই ছবি বার বার ফুটে উঠছে। এই  শপিং ডিজঅর্ডার-এ এখনই রাশ না পরালে ভবিষ্যতে যে বহু ব্যবসাই লাটে উঠবে সেই দেওয়াল লিখনও স্পষ্ট হচ্ছে। বাড়তে থাকা রিটার্ন-এর কী কী প্রভাব পড়ছে অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর, কী ভাবে এই অসুখের মোকাবিলা করা যায় জানতে সাদাম্পটন ইউনিভার্সিটি-তে তৈরি হয়েছে প্রডাক্ট রিটার্ন রিসার্চ গ্রুপ। হয়তো ভবিষ্যতে সদর্থক কোনও রাস্তা বেরোবে; খালি ততদিনে যেন ম্যাচ হাতের বাইরে বেরিয়ে না যায়! আজ ক্রেতা-বিক্রেতা দু-পক্ষেরই একটু সংবেদনশীল হওয়ার সময়; জগতের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ছেড়েই দিলাম, অন্তত ‘মধুবাবু’র মতো দীর্ঘ আইনি ঝামেলাও যদি এড়াতে চান, তা হলে ভাবার সময় এসেছে— টু রিটার্ন অর নট টু রিটার্ন!   

       

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook