ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • নবরূপে ভারতীয়তার প্রকাশ


    অর্ক দাশ (Arka Das) (August 20, 2022)
     

    গত ১৩ আগস্ট, ‘অম্বুজা-নেওটিয়া’ ইউটিউব চ্যানেলে প্রিমিয়ার হয়ে গেল ‘জয় হে ২.০’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আর সুর দেওয়া চেতনামন্ত্র তথা বন্দনাগীতিটি যা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, তাকে নবরূপে অভিনব উপায়ে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন কলকাতার সৌম্যজিৎ-সৌরেন্দ্র জুটি । ৮ মিনিট দীর্ঘ এই ভিডিওটিতে সেই ভারতীয়তারই প্রকাশ। ভারতের স্বাধীনতা লাভের ৭৫ বছর পূর্তির উদ্‌যাপন উপলক্ষে, সৌম্যজিৎ-সৌরেন্দ্রর রূপায়িত ভারতের জাতীয় সংগীতের এই বিবর্ধিত সংস্করণটি বোনা হয়েছে গোটা দেশের ৭৫ জন শিল্পীকে নিয়ে। সেখানে যেমন শাস্ত্রীয় সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন, তেমনই রয়েছেন সংগীতজগতের তরুণ তুর্কিরাও। ইতিমধ্যেই ভিডিওটি লক্ষাধিক ভিউ পেয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।

    বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য– এই তো ভারতের অন্তর্নিহিত সুর। আর তার প্রসারে, তা উজ্জীবিত করতে গত শতকের আটের দশকে ভারত সরকারের তরফে উপস্থাপিত হয়েছিল দু’টি ভিডিও, ‘বাজে সরগম’ এবং ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’। জাতীয় সমন্বয়, সম্প্রীতির বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে এই গান দু’টির বিশেষ অবদান রয়েছে ভারত ভূখণ্ডে। সেসময় ভারতের একমাত্র জাতীয় চ্যানেল ‘দূরদর্শন’-এ প্রায়শই সম্প্রচারিত হত এই দু’টি উপস্থাপনা। বলা যেতে পারেওই দুই ভিডিও থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ‘জয় হে ২.০’ তৈরি হয়েছে। ওই দু’টি ভিডিওয় অংশ নিয়েছিলেন এমন অনেক নামকরা শিল্পী রয়েছেন এই নব আয়োজনে। 

    কেমন লাগল, কীভাবে হল এত বড় আয়োজন– জেনে নিতে, অন্যতম দুই কান্ডারি সৌম্যজিৎ-সৌরেন্দ্রর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনে বসল ‘ডাকবাংলা’।

    ‘জয় হে ২.০’-র এই পুরো ভাবনাটা নিয়ে আমাদের আগে বলুন…

    সৌরেন্দ্র: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সংগীতের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা ছিল। দেশাত্মবোধক ও দেশপ্রেমের গানের পরিসরে বঙ্গসমাজের তো খুবই ঐশ্বর্যময় এবং সুদীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্তই তো ‘বন্দেমাতরম্‌’। আর ধরুন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানগুলিও। সংগীতের মধ্য দিয়েই একটা বড় আন্দোলন তৈরি হয়েছিল, যা প্রভূত শক্তি জুগিয়েছিল মানুষকে, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়তে। আমরা অনেক ভেবে দেখলাম, দেশের একঝাঁক বড়মাপের গুণীমানুষ ‘জনগণমন’ গানে গলা মেলাবেন– এর থেকে উত্তম উপায়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির উদ্‌যাপন আর কীই বা হতে পারে! সকলে মিলে একসঙ্গে একজোট হয়ে ভারতের জাতীয়তাবাদকে আরও শক্তি জোগাবেন– এটা কি মহানন্দের বিষয় নয়?

    আমাদের দেশ বৈচিত্রে পরিপূর্ণ। কিন্তু এই একটা গান ব্যতিক্রম। সবসময় মানুষকে একজোট করেছে, কাছাকাছি এনেছে। প্রায় চার প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের নিয়ে শেষমেশ এই আয়োজন আমরা সাঙ্গ করতে পারলাম। ভাবুন না, এই আয়োজনে থাকলেন ভিক্কু বিনায়করামজি, হরিপ্রসাদজি, আশাজি– যাঁরা প্রায় নব্বই ছুঁইছুঁই। আবার থাকলেন ২৫-৩৫ বছর বয়সের তরুণ-তরুণী শিল্পীও। এই তো আমাদের রিদম শ, বা ধরুন সোমলতা, তারপর প্রতিভা সিং বাঘেল, আর অন্বেষা। এমন কিছু শিল্পী রয়েছেন, যাঁরা ভারতকে স্বাধীন হতে দেখেছেন। এই গান তো ঐক্যের গান। তাই আমরা ভারতীয় সংগীতের বিভিন্ন ঘরানা, ফর্মকে ধরার চেষ্টা করেছি। সেখানে যেমন লোকসংগীত রয়েছে, তেমনই রয়েছে পপ, রয়েছে রাগ সংগীত, তেমনই কনটেম্পোরারি ফর্মও।

    ঘট্ম কিংবদন্তি পণ্ডিত ভিক্কু বিনায়করাম

    এত্ত বড় আয়োজন– তা কত দিন লাগল শেষ করতে?

    প্রডিউসার ও প্রেজেন্টার হিসাবে হর্ষবর্ধন নেওটিয়া তো এই পরিকল্পনাটা নিয়ে প্রায় এক বছর আগে থেকে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সঙ্গী করেছিলেন আমাদের । কিন্তু সত্যি বলতে, আমরা একদম মাঠে নামলাম বলতে যা বোঝায়, সেটা ২০২২-এর জুনে। ওই বিশ্ব সংগীত দিবসের সময়টা করে। এই প্রোজেক্টটার জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা, তার প্রকরণ এবং নেপথ্যে পাহাড়প্রমাণ প্রোডাকশনের ঝক্কি তো ছিলই। আর বলতে নেই, প্রায় প্রত্যেকেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন একটা ফোনকলেই।

    প্রি-প্রোডাকশনের কথা বাদ দিলে, গোটা শুট আর রেকর্ডিংয়ের কাজটা চলেছিল ২২ দিন ধরে। ১০ জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল। প্রায় তিন সপ্তাহ জুড়ে, আমরা ভারতের প্রায় এপার-ওপার চষেছি। কখনও নাগাল্যান্ড, তো কখনও থর মরুভূমি। কখনও মুম্বইয়ের আরব সাগর, তো পরেরদিনই কন্যাকুমারীতে বিবেকানন্দ রক। একেক জায়গায় একেকজন শিল্পীকে নিয়ে রেকর্ডিং আর শুটিং। 

    কর্ণাটকি বেহালা-সম্রাট এল সুব্রহ্মণ্যম এবং পুত্র আম্বি

    এই গোটা কাজটায়, রেকর্ডিং হোক বা শুটিং, এসব মিলিয়ে অনেক স্মৃতি তো তৈরি হয়েছেই। সবচেয়ে স্মৃতিময় হিসেবে কী কী থেকে যাবে বলে মনে হয়?

    কোভিড পর্বের পর, মিউজিক তৈরির প্রযুক্তিগত দিকগুলো অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আর ব্যাপারটা গ্রহণযোগ্যও হয়ে উঠেছে অনেক। শিল্পীদের মধ্যে সেই গুমরটা আজ নেই। মানুষ হিসেবে অনেক বদল ঘটেছে সবারই। ফলে, সেটা তো একটা বিরাট প্রভাব ফেলেছে এই কাজের ক্ষেত্রে। 

    আমরা মূলত তিনটে সেট-আপ নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি– একটা সাউন্ড রেকর্ডিং ক্রু, একটা শুটিং ক্রু, আরেকটা প্রোডাকশন ক্রু। আমরা হালকার উপর দিয়ে কাজটাকে সারার চেষ্টা করেছিলাম। খুব সাধারণ রেকর্ডিং সেট-আপ ছিল আমাদের। জগঝম্পময় শুটিং বা ক্যামেরার ব্যাপারস্যাপারও আমরা রাখিনি যথারীতি। মানে, যাতে সহজেই ছড়িয়ে বসা যাবে, আবার গুটিয়ে ফেলতেও সময় লাগবে না। আমরা গোটা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই সেট-আপ নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। কোনও হম্বিতম্বি, ওজর ছিল না আমাদের। কোনওরকম নিরাপত্তা নিয়ে ঝক্কিচিন্তাও রাখিনি। ইউরোপ-আমেরিকায় ইতিমধ্যে অনেকদিন ধরেই এরকম সহজ পদ্ধতিতে, মোবাইল সেট-আপে কাজ সচল হয়ে গিয়েছে। এবং তাতে কিন্তু প্রযুক্তির কোনও কমতি নেই। যথেষ্ট তরিবত রয়েছে এমন আয়োজনে। কিন্তু ঝক্কি কম। আমরা অবশ্য প্রথম এভাবে কাজ করলাম। পদ্ধতিটাকে আমরা বেশ নিজেদের মতো করে নিয়েছিলাম। ন্যাচারাল সাউন্ডকে আমরা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করিনি। ফলে, রেকর্ডিংয়ে পাখির ডাক যেমন ঢুকে পড়েছে, তেমনই ঢুকে পড়েছে হাওয়া আর সমুদ্রের শব্দ। এভাবে সাউন্ডস্কেপটাকে আরও গভীর, আরও প্রকৃতির কাছাকাছি রাখতে চেষ্টা করেছি। ফলে, একটা সৎ ‘সাউন্ড অফ ইন্ডিয়া’, ভারতের সুরমালা উপস্থাপনের দিকে এগিয়ে গেছলাম আমরা। 

    আর এই কাজটা পুরোদস্তুর ‘মেড-ইন-কলকাতা’ ভিডিও। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একজোট করে গড়ে তোলা। যেমনটা আমরা প্রায়ই করে থাকি, এবং করতেই চাই। গানের পুরো নির্মাণ, পরিকল্পনা, আয়োজন আমাদের (সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ)। আর মিক্সিং ও মাস্টারিংয়ের কাজ করেছেন স্টুডিও ‘ভাইব্রেশন’ (ঊষা উত্থুপ পরিচালিত)-এর গৌতম বসু। স্টুডিওয় কাজ করার সময় সারাক্ষণ একটা ওম আমাদের জড়িয়ে ছিল, সেটা আন্তরিকতারই। এই স্টুডিও আমাদের বহু বছর ধরে আগলে রেখেছে বলতে হয়। আর আমাদের কাছেও বেশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে এই প্রতিষ্ঠান। 

    একটা সংগীতায়োজন, সেখানে এত বড় মাপের ৭৫ জন শিল্পীকে একত্র করা। কীভাবে সামলালেন? কীরকম পদ্ধতি ছিল আপনাদের?

    সৌম্যজিৎ: প্রায় ৩০-৪০ জন শিল্পী রয়েছেন এই গানে, যাঁরা একদম শীর্ষস্থানীয় মানুষ। জনপ্রিয় তো বটেই। ফলে, আমরা খুব সচেতন ছিলাম, যেন ভিডিওটা কোনওভাবে বলিউড মার্কা হয়ে না যায়। আমরা চেয়েছিলাম, শিল্পীরা যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তাই ভাবলাম, লোকসংগীতকেও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। কিন্তু তার মধ্যেও, আমরা সচেতনভাবে কিংবদন্তি শিল্পীদের রাখার চেষ্টা করেছিলাম। যেমন তিজ্জন বাই, গুরু রিউবেন মাশাংভা, লু মাজাও কিংবা আমাদের আপন পার্বতী বাউল। একইসঙ্গে, শাস্ত্রীয় সংগীতের কিংবদন্তি মানুষজনদেরও আমরা অনুরোধ করলাম। পরভিন সুলতানা, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওস্তাদ রশিদ খান আমাদের এই প্রোজেক্টের অংশ হতে রাজি হয়ে গেলেন। সত্যি বলতে, আমাদের ইচ্ছে-তালিকায় যতজন শিল্পী ছিলেন, তার প্রায় ৯৫ শতাংশ শিল্পীকেই আমরা রেকর্ড করতে পেরেছি। এ আমাদের বিশাল প্রাপ্তি। বাকি ৫ শতাংশর ক্ষেত্রে, কারও কারও ডেট পাওয়া গেল না, কিংবা কনট্র্যাক্ট ছিল অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে। যার ফলে, তাঁদের আমরা শামিল করতে পারলাম না। 

    নাগাল্যান্ডের প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত দল টেটসিও সিস্টার্স

    সৌরেন্দ্র: যেমন আমরা (তবলা মায়েস্ত্রো) ওস্তাদ জাকির হুসেন-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি তো প্রজেক্টের ব্যাপারে শুনেই একদম একবাক্যে রাজি হয়ে গেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ সময় মিলল না আমাদের। কী আর করা যাবে!

    তবে আমরা সত্যিই খুব খুশি যে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীদের আমরা পেয়েছি। উত্তর-পূর্ব, গুজরাত, রাজস্থান– এই জায়গাগুলো মুম্বই কেন্দ্রিক বলিউড, বা ধরুন কলকাতা বা চেন্নাই, আর বেঙ্গালুরুর মতো ভারতের গতানুগতিক সংগীত ক্ষেত্র তো নয়। আমরা তেমন তেমন জায়গাতেও শিল্পীদের রেকর্ড করার সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। 

    এখন যখন ভিডিওটা দেখি, হতভম্ব হয়ে যাই। এরকম কাজ করা আবার আমাদের পক্ষে সম্ভব বলে মনে হয় না। কিন্তু যখন এটার কথা ভাবতে শুরু করেছিলাম, এবং কাজটায় নেমেও পড়লাম, একটা অজানা শক্তি যেন আমাদের সঙ্গ দিয়েছিল। নয়তো ওরকম একটানা ঘটনাবহুল ২২ দিন ধরে কাজ চালিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না। 

    সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিতের পরবর্তী পরিকল্পনা কী?

    সৌম্যজিৎ: আপাতত, সমস্ত ফোকাস আমাদের নিজস্ব কম্পোজিশনে, এবং আগামী ইন্টারন্যাশনাল টুরে। আর সত্যিই যদি, এরকম কোনও প্রজেক্ট আসে, যেখানে অভিনব ভাবনাচিন্তা থাকবে, আমরা সবসময় তৈরি। 

    (ঈষৎ হেসে) আমরা ঠিক জানি না, কেন আমরা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে তেমন ডাক পাই না। কিন্তু, আমি নিশ্চিত, কোনও না কোনও ভালো সিনেমার জন্য আমরা ডাক পাবই, আমাদের সংগীতের জন্য সেরকম কোনও সিনেমা নিশ্চয়ই অপেক্ষা করছে। চলচ্চিত্র একটা সুন্দর মাধ্যম, আর আমরা সত্যিই একটা ঠিকঠাক সিনেমার প্রস্তাবের পথ চেয়ে আছি।

    শুভা মুদগল

    ‘সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিতের কাজের প্রধান পরিচয় হল সূক্ষ্ম পরিকল্পনা, পুঙ্খানুপুঙ্খ ডিটেল নিয়ে চিন্তা– এবং এই একই গুণ ৭৫জন শিল্পীকে নিয়ে তৈরি করা ‘জয় হে ২.০’ গান এবং মিউজিক ভিডিওতে তাঁরা নিয়ে এসেছেন। আমাকে এই বিশাল প্রজেক্টে নিমন্ত্রণ জানিয়ে সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিত আমার অংশের একটা গাইড ট্র্যাক পাঠিয়ে দেন। সুতরাং গানে আমার বাংলা উচ্চারণ যদি উতরে গিয়ে থাকে, তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব পাবে কিন্তু সৌম্যজিতের গলায় গাওয়া ওই গাইড ট্র্যাক!’ 

    আমার ভিডিও সিকোয়েন্সটা দিল্লির লোদী গার্ডেনে শুট করা হয়েছিল। মনে আছে, আমার পিছনে সিকান্দর লোদীর সমাধি, আর সেই সকালের ঝকঝকে নীল আকাশ।   

    আমি এই প্রজেক্ট-টায় অংশ নিতে পেরে খুব খুশি, তার আরো একটা কারণ এই, যে একই গানে যে এত বিভিন্ন ধরণের শিল্পী গলা মেলাতে পেরেছেন। এটা তো সচরাচর দেখা যায় না! আমাদের এই প্রচেষ্টা এই বিভক্ত, পোলারাইজড দেশটাকে কতটা ঐক্যবদ্ধ করবে, তা জানি না। আমরা, সঙ্গীতশিল্পীরা, শুধুমাত্র সেই আশায়, এক সুরে, একই গান গেয়ে যেতে পারি। 

    রূপম ইসলাম

    ‘জয় হে ২.০’ প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করার প্রস্তাব পাওয়ায় আমি উত্তেজিত হয়ে পড়ি। আশা ভোঁসলে, ওস্তাদ আমজাদ আলি খাঁ সাহেব, হরিহরণ– এঁরা যে মাপের শিল্পী, এবং তাঁদের সঙ্গে আমিও একই গানে অংশগ্রহণ করতে চলেছি, এই প্রস্তাব আসার দশ মিনিটের মধ্যে আমি আমার অংশ রেকর্ড করে পাঠিয়ে দিই। পরে, মিউজিক ভিডিও দেখে গায়ে কাঁটা দেয়, যাকে বলে গুজবাম্পস! ভীষণ সুন্দর হয়েছেয় ভিডিওটা! 

    আমার দাদু স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন; বহুবার জেল খেটেছেন। আমাদের ছোটবেলার বাড়িতে জেলে থাকাকালীন তাঁর তৈরি আসবাব-পত্র ভর্তি ছিল। সুতরাং, দেশের জন্যে গান গাওয়া, জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে তৈরি একটা প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করা আমার কাছে খুবই গর্বের বিষয়। এই ইমোশানের তুলনা হয় না।’  

    Read in English

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook